রাজধানীর পর ৬৪ জেলায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিনই, দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর তালিকাও। বর্তমানে বাংলাদেশের কোনো কোনো হাসপাতালে ঘণ্টায় ৭০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে। প্রতি মিনিটে ভর্তি হচ্ছে একজনের বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ মাসে (আগস্ট) দিনে গড়ে ১ হাজার ৬৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগস্টের প্রথম তিন দিনে ঢাকার ৩৫টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং আটটি বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এসব রোগী ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাবে, গতকাল শনিবার (৩ আগস্ট) নতুন ১ হাজার ৬৪৯ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো একটি বিশেষ রোগে আগে এত রোগীর চাপ দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোয়।
সরকারি হাসপাতালগুলোর একটি বাড়তি সুবিধা হলো, তারা শয্যার বাইরে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি করতে পারে। এই সুবিধা বেসরকারি হাসপাতালে নেই।
সরকার বলছে, ৬৪ জেলাতেই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন ও রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, ঢাকার বাইরে অন্তত ২৬টি জেলায় আড়াই শতাধিক রোগী স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর অর্থ, এসব জেলায় এডিস মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাবে, ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ৯১৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছে ১৮ জন। আর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও পরিবারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এবং গণমাধ্যমের হিসাবে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৭৪ জন।
সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ও বেসরকারি গবেষকেরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি।