‘ভাইয়া, একটু দাঁড়ান আমার পরীক্ষা আছে, আমার ক্লাস শুরু হয়ে গেছে।’ এভাবে পাল্লা দিয়ে লিফটে উঠতে হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ভবনের (বিবিএ) ১৫ বিভাগের প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থীকে। এই শিক্ষার্থীদের ওঠানামা করার জন্য রয়েছে মাত্র একটি লিফট। ফলে লিফটে উঠতে গিয়ে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ কারণে সময়মতো ক্লাসে পৌঁছতে পারে না অনেকে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একটিমাত্র লিফট দিয়ে ওঠানামা করতে গিয়ে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তা ছাড়া ওঠার সময় লিফট অনবরত দুলতে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভবনের ৯ তলা পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগ, শ্রেণিকক্ষ থাকলেও লিফট ওঠানামা করে ছয়তলা পর্যন্ত। ভবনটিতে সাতটি লিফট লাগানোর জায়গা রাখা হয়েছে। কিন্তু লিফট লাগানো হয়েছে মাত্র দুটি। এর মধ্যে একটি শিক্ষকরা এবং আরেকটি শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করছে। ভবনটিতে ১৫টি বিভাগে মোট সাত হাজার ৮৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কাওসার আহমেদ বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টায় ক্লাসে উপস্থিত থাকার জন্য দৌড়ের ওপর থাকতে হয়। কিন্তু যত দ্রুতই আসি না কেন, লিফটের জন্য দেরি হয়ে যায়। একসঙ্গে ১৮ জন ওঠার মতো লিফটের সক্ষমতা থাকলেও ১৮ জন উঠলেই লিফট দুলতে থাকে। তাই যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। সময়মতো ক্লাসে পৌঁছানো যায় না। অনেক সময় লিফটে ওঠা নিয়েও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।’
নাট্যকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল সুবায়েত জান্নাত বলেন, ‘একটি লিফটের বিপরীতে শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ধাক্কাধাক্কি করে কখনো উঠতে পারি, কখনো পারি না। আর মাঝেমধ্যে নিরুপায় হয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে হয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহা বলেন, ‘ভবনে দুটি লিফট চালু রয়েছে আর একটি লিফট ওপরে কাজ করার জন্য লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে বাকি লিফটগুলো লাগানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের কাছে লিফটের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘ভবনে কাজ চলার কারণে সবকটি লিফট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জরুরি ওঠানামা করার জন্য এটা চালু রাখা হয়েছে। ভবনের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে সব লিফট লাগানো হবে। এর আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এভাবেই ক্লাস করতে হবে।’