জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, বর্তমান শিক্ষাক্ষেত্রে অযোগ্য লোকের ছড়াছড়ি। যাঁরা শিক্ষকতা করছেন, তাঁরা অন্য কোথাও সুযোগ না পেয়ে শিক্ষকতাকে উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে নিচ্ছেন। তাঁদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের নবীনবরণ ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের শিক্ষকরা অনেকেই জানেন না সৃজনশীল পদ্ধতি কী। তাই শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে দায়িত্ব নিতে হবে। একদম ছোট থেকে শিশুদের সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে হবে।’
আরও পড়ুন: ৪২ শতাংশই অন্য চাকরি না পেয়ে শিক্ষকতায় এসেছেন
শিক্ষকতা পেশাকে আরও আকর্ষণীয় করা হবে : শিক্ষামন্ত্রী
এর আগে গণসাক্ষরতা অভিযানের ‘এডুকেশন ওয়াচ রিপোর্ট ২০১৮-১৯’-এ জানা যায়, শিক্ষকতাকে সবচেয়ে সম্মানজনক পেশাগুলোর একটি ভাবা হলেও পেশা, প্রতিষ্ঠান ও সম্মানী—এই তিনটি মিলিয়ে দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার মাত্র ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষক সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাকি ৭৩ শতাংশ শিক্ষকই নিজেদের পেশা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। অন্য কোনও চাকরি না পেয়ে শিক্ষকতায় এসেছেন ৪২ শতাংশ। এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষক তাঁদের বর্তমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আর শিক্ষকতা পেশা ছাড়তে চান ৫ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষক। তবে পেশা, প্রতিষ্ঠান ও সম্মানী মিলিয়ে তুলনামূলকভাবে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে সন্তুষ্টি বেশি। তাঁদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ তিনটি ক্ষেত্রেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মোট ৬০০টি সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার তিন হাজার শিক্ষকের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এদিকে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষকতা পেশাকে আরও আকর্ষণীয় করা হবে। শিক্ষকতা পেশা হতে হবে জীবনের ব্রত। শিক্ষকদের মান বৃদ্ধি করতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
বুধবারের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহানের সভাপতিত্বে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. চঞ্চল কুমার বোস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষাশহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নবীনবরণ, বিদায় সংবর্ধনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।