‘সবাই বুলছে আজ রেজাল্ট তুমার (তোমার) নাতনির। কেউ কেউ বুলছে (বলছে) ওতো (হাসিনা) মারা গেছে রেজাল্ট নিয়ে কি হবে। তার পরেও আমার জান থামছে না। আমি সকালেই চলি (চলে) গেছি (গিয়েছি) স্কুলে। রেজাল্ট যখন দিলো আমার আত্মা ফাঁটি (ফেটে) গেলো। তোর এ রেজাল্ট বিষ হয়ে আমার আন্তরে থ্যাকলো (থাকলো)।
রাজশাহীর পবায় (১৫ ডিসেম্বর) দুর্বৃত্তের হাতে নিহত হাসিনা খাতুনের নানা আকবর আলী মুঠোফোনে এসব কথা বলছিলেন।
এবছর সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) পরীক্ষায় একই স্কুল থেকে ৩ দশমিক ৮ পয়েন্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে হাসিনা। হাসিনা জেলার গোদাগাড়ীর রিশিকুল ইউনিয়নের বাইপুর গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আকবর আলী দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘বাইরের গেট মারা (লাগানো) ছিলো। বাড়িতে কেউ ছিলো না। শুধু ঘরের দরজা খোলা ছিলো। ঘরের ভিতরে (ভেতরে) টিভিও চলছিলো। আমার জান (হাসিনা) একাই ছিলো। ওরা (দুর্বৃত্তরা) আমার ঘরে ডুকে, আমার হ্যাসি (হাসুয়া) দি (দিয়ে) আমার জানকে (হাসিনা) গলা (কাটি) কেটে মারি (হত্যা) ফেলিছে (ফেলেছে)। এ সর্বনাশ কে করলো আমার? আল্লাহ তুমি ওই পাষণ্ডকে দেখাও। আমি ওর বিচার চাই।’
হাসিনার শিক্ষক রুমিলা খাতুন বলেন, ‘ওর (হাসিনা) পড়া শুনতে মজা লাগত। পড়া শুরু করলে এক তালে পড়ে যেত। মিষ্টি মেজাজের মেয়ে ছিল সে। ওকে ছাড়া ক্লাস জমত না। সব সময় ভালো রেজাল্ট (ফল) করত। ইচ্ছাও ছিল ভালো রেজাল্টের। কিন্তু নিজের পাসের খবর কানে শুনে যেতে পারল না। মেয়েটাকে নির্মমভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।’
পবার বাড়ইপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষক হাসিনার হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন।