বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগের পাঠক সমাবেশে এম আবদুল আলীমের লেখা জীবনীগ্রন্থ 'আনিসুজ্জামান'-এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ছিলেন শিক্ষকেরও শিক্ষক। জীবনের শেষ পর্যায়ে জাতীয় অধ্যাপক হলেও তিনি এর আগে থেকেই জাতির শিক্ষক ছিলেন। তিনি ছিলেন সব মানুষের প্রিয় ও ভালোবাসার মানুষ। তার জীবনও বহুমাত্রিক। তার লেখা, কাজ ও গবেষণা মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিকে উস্কে দেয়। চিন্তা ও কর্মে তিনি ছিলেন আধুনিক মানুষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহবাগের পাঠক সমাবেশে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ৮৫তম জন্মদিনে এম আবদুল আলীমের লেখা জীবনীগ্রন্থ 'আনিসুজ্জামান'-এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্ট ওয়েজ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের স্ত্রী সিদ্দিকা জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ আজিজুল হক এবং স্টুডেন্ট ওয়েজের স্বত্বাধিকারী মো. লিয়াকত উল্লাহ। অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন বইয়ের লেখক এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক এম আবদুল আলীম, কবি ও লেখক পিয়াস মজিদ, কবি ও সম্পাদক ওবায়েদ আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক তাশরিক-ই-হাবিব প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিদ্দিকা জামান বলেন, এই প্রথম তাকে ছাড়া তার জন্মদিন পালন করা হচ্ছে। এটা একদিকে যেমন আনন্দের, তেমনি বেদনার। আনন্দ এ কারণে যে তাকে এবং তার কর্মকে সবাই মনে রেখেছে। অন্যদিকে, বেদনা এই কারণে যে, তাকে আমরা আর পাব না। লেখক ও প্রকাশককে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আনিসুজ্জামান তার কর্মের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।
সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, আনিসুজ্জামান অনেক সামাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন। অনেক মানুষের সঙ্গেই তার যোগাযোগ ছিল। কিন্তু তার বিদায় মেনে নেওয়ার মতো নয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে তাকে অনেকটা একাই চলে যেতে হয়। তিনি বলেন, আনিসুজ্জামান ছিলেন 'অনেক মানুষ'। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে বুদ্ধিজীবী হিসেবে তিনি যে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন, তা চিরস্মরণীয়।
লেখক আবদুল আলীম স্মৃতিচারণ করে বলেন, আনিসুজ্জামান সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে এ গ্রন্থ রচনা করা হয়েছে।
লিয়াকত উল্লাহ বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ছিলেন সব ধরনের মানুষের প্রিয় ও ভালোবাসার মানুষ। জন্মদিনে আমার প্রকাশনা থেকে তার জীবনীগ্রন্থ প্রকাশ করতে পেরে আমি আনন্দিত।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের লেখা মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিকে উস্কে দেয়। কোনো একটি বিষয়কে তিনি তীক্ষষ্ট, তির্যক ও কৌতুকার্থেও সংক্ষেপে তুলে ধরতে পারতেন। তিনি বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ওপর দীর্ঘদিন গবেষণা করে তার পঠন-পাঠনকে সুন্দর ভাষায় সংক্ষিপ্ত করে উপস্থাপন করা উচিত।