সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার বিকেলে কলেজের সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক ও কর্মচারীসহ কর্মরত ২৫ জনের মধ্যে ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, নতুন জাতীয়করণকৃত জগন্নাথপুর সরকারি কলেজ জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কলেজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। অথচ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কলেজের গাছ ও ডালপালা কেটে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। ওই টাকা তিনি কলেজের তহবিলেও জমা দেননি। তাছাড়া কলেজের পুকুর লিজ বাবদ এক লাখ ৮০ হাজার টাকা কলেজ ফান্ডে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেননি তিনি। ওই টাকা কলেজের আয়-ব্যয়ের কোথাও এন্ট্রি করা নেই। সরকারি বিধান অনুযায়ী, তিনশ' টাকার অতিরিক্ত কোনো টাকা অধ্যক্ষ নগদ রাখতে পারেন না।
দায়িত্বভাতা হিসেবে ৫ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়ার বিধান থাকলেও তিনি প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা নিচ্ছেন, যা সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিট টিমের আপত্তিতে এসেছে।
কলেজ ভবনে বসবাস করলেও তিনি প্রতি মাসে ১৯ হাজার টাকা বাসা ভাড়া বাবদ নিচ্ছেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কলেজের আর্থিক ও অফিস ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে। চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার হিসাব ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের প্রাপ্য পারিশ্রমিকও দেননি। চলতি বছরের ডিগ্রি ফাইনাল পরীক্ষার প্রকৃত ব্যয়ের ছয়গুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়াও কলেজের অফিস সহকারীর নামে ইস্যুকৃত এক লাখ ৫৫ হাজার টাকার চেক রেজিস্টারে এন্ট্রি না করে তার স্বাক্ষর ছাড়া নিজেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন। অভিযোগকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সুষ্ঠু তদন্তক্রমে নিরপেক্ষ অডিটের মাধ্যমে কলেজের আর্থিক অব্যবস্থাপনার চিত্র নিরূপণের পাশাপাশি জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ঠিক নয়। শিক্ষকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, তার অবসান হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম বলেন, 'জগন্নাথপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
সৌজন্যে: সমকাল