অধ্যাপক সামাদের ইচ্ছা পূরণ হলো না | বিবিধ নিউজ

অধ্যাপক সামাদের ইচ্ছা পূরণ হলো না

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত দুই বাংলাদেশির মধ্যে একজন কুড়িগ্রামের ড. আবদুস সামাদ। তার বাড়ি নাগেশ্বরী পৌর এলাকার মধুরহাইল্যা গ্রামে। তার বাবার নাম জামাল উদ্দিন সরকার। সপরিবারে নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত ড. সামাদ সেখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি আল নূর

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত দুই বাংলাদেশির মধ্যে একজন কুড়িগ্রামের ড. আবদুস সামাদ। তার বাড়ি নাগেশ্বরী পৌর এলাকার মধুরহাইল্যা গ্রামে। তার বাবার নাম জামাল উদ্দিন সরকার। সপরিবারে নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত ড. সামাদ সেখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি আল নূর মসজিদে ইমামতি করতেন। তিনি ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সাবেক শিক্ষক। 

অধ্যাপক সামাদের ইচ্ছা পূরণ হলো না

তার স্বজনরা জানান, আগামী মাসে দেশে ফিরে নিজ গ্রামে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা ছিল ড. সামাদের। কিন্তু বন্দুকধারীর বুলেটে তছনছ হয়ে গেছে সব পরিকল্পনা। অত্যন্ত ধর্মভীরু মানুষটির এমন নির্মম পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না তার গ্রামের মানুষ। স্বজনদের আহাজারিতে শোকার্ত হয়ে উঠেছে পরিবেশ। দ্রুততম সময়ে মরদেহ দেশে আনার পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সবাই। 

ড. সামাদের ভাতিজা আবদুল মান্নান জানান, ঘটনার পর জানতে পারি চাচা আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে তিনি মারা যান। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত তার মরদেহ দেশে আনা হোক এবং জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।

পরিবারের সদস্যরা জানান, মধুরহাইল্যা গ্রামে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা শেষে বাকৃবি থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। এর আগে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটেও চাকরি করেছেন কৃষিবিদ সামাদ। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে নিউজিল্যান্ডের লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে যান। দেশে ফিরে আবারও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক হন। কিন্তু চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই গত বছর তিনি অবসর নেন বলে জানান তার সহকর্মী অধ্যাপক ড. সুলতান উদ্দিন ভূঞা।


স্বজনরা আরও জানান, ড. সামাদের তিন ছেলের মধ্যে একজন দেশে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। নিউজিল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাওয়ার পর বাকি দুই ছেলে এবং স্ত্রী কিশোয়ারাকে নিয়ে গত ৮-১০ বছর ধরে সেখানেই বসবাস করছেন সামাদ। তার পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে একজন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। তারেক মাহমুদ ও তানভীর হাসান নামে আরও দুই ভাই নিউজিল্যান্ডে থাকেন। সামাদের বোন রয়েছেন ৯ জন। 

ড. সামাদের ছোটভাই নাগেশ্বরী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শামসুদ্দিন জানান, আমার ভাই ও তার পরিবার অত্যন্ত ধর্মভীরু। মাঝে মধ্যে তিনি দেশে আসতেন। আগামী মাসে দেশে ফিরে গ্রামের বাড়িতে একটি মাদরাসা করার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণ করতে পারলেন না। হামলার ঘটনায় ড. সামাদ নিহত হলেও তার দুই ছেলে ও স্ত্রী নিরাপদে রয়েছেন বলেও জানান শামসুদ্দিন। 

আরও পড়ুন: 

বাংলাদেশি অধ্যাপক নিহত, ছেলে নিখোঁজ

নিউজিল্যান্ডে নিহত ড. সামাদের ছেলে যা বললেন