অনলাইন ফলাফলে ফেল থাকলেও প্রাপ্ত মার্কশিটে পাস করেছে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের ১০ শিক্ষার্থী। অথচ, তারা বোর্ডে খাতা চ্যালেঞ্জ করেও পাস করেনি। পরে অর্থের বিনিময়ে পাস করেছে, এমন দাবি ওই শিক্ষার্থীদের ঘনিষ্ট সূত্রের। তবে দাবিকৃত তিন লাখ টাকার সম্পূর্ণ পরিশোধ না করায় অনলাইন ফলাফলে এখনো তাদের পাস দেখানো হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে ওই শিক্ষার্থীর ঘনিষ্টরা। এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এস নাহার খাতুন নামের এক অভিভাবক সম্প্রতি বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের সচিব আলমগীর হোসেন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এছাড়া পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের এইচএসসি সমমানের শিক্ষার্থী নান্টু ইসলাম, আবু সাইদ ও মশিউর রহমান লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের (বাকাশিবো) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালের সাথে দেখা করলে তিনি নির্ধারিত তিন লাখ টাকা নিয়ে বোর্ডের সনদ লেখক মো. জাহিদুর রহমান ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খোরশেদ আলমের কাছে যেতে বলেন। এরপর তাদের হাতে দুই লাখ টাকা প্রদান করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দাবীকৃত আরো এক লাখ টাকা না পাওয়ায় ওইসব শিক্ষার্থীকে মার্কশীটে পাস করানো হলেও অনলাইন ফলাফলে পাস দেখানো হয়নি। অনলাইন ফলাফলে ফেল দেখানোর কারণে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা উচ্চতর শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারছেন না। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এর আগে সুশীল কুমার পালের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ এনে গত ৯ অক্টোবর রাজশাহীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে তড়িঘড়ি ফেল করা ৩৫০ শিক্ষার্থীকে পাস করানো হয় বলে জানা যায়। অন্যদিকে গত ১৬ অক্টোবর বাকাশিবো’র যুগ্ম সচিব মো. নায়েব আলী মন্ডল স্বাক্ষরিত আদেশে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সিষ্টেম এনালিষ্ট সুশীল কুমার পালের পরিবর্তে প্রোগ্রামার মোহাম্মদ সামশুল আলমকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে এটাও বিধি বহির্ভূত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, বর্তমানে হয়ত ‘অনলাইন ফলাফলে পাস, মার্কশিটে ফেল’ নয়ত অনলাইন ফলাফলে ফেল, মার্কশিটে পাস’ এমন বেড়াজালে ঝুলে আছে সারাদেশের প্রায় ১৯ হাজার কারিগরী শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত। এটা কী কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালের অদক্ষতা, না উত্কচ নেয়ার কৌশল? প্রশ্ন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
অভিযোগের বিষয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পাল অবশ্য বলেছেন, ‘আমরা রেজাল্ট চেঞ্জ করতে পারি। যদি তারা তথ্য দিয়ে যোগাযোগ করে তাহলেই পাস করিয়ে দিবো। তবে টাকার বিনিময়ে এসব করি, কথাটি সঠিক নয়। ’