অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার যত চ্যালেঞ্জ - দৈনিকশিক্ষা

অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার যত চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হলে নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেল করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা না করে ভর্তি পরীক্ষা নিলে মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে গ্রামের ও অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরা। আর প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নকল করে অনেকে পূর্ণ মার্কস পেয়ে যেতে পারেন। এ কারণেই অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কিছুটায় শঙ্কায় রয়েছেন।

জানা গেছে, যে অ্যাপসের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হবে সেটি তৈরি করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর। যার নাম ‘প্রক্টরড রিমোট এক্সামিনেশন’। তিনি বলেন, এ সফটওয়্যারটি মোবাইল বেইজড একটি অ্যাপস, এটি এখন অনলাইনে কাজ করে। তবে অফলাইনেও যাতে কাজ করে সে জন্য সফটওয়্যার ডেভেলপ করা হচ্ছে। এই সফটওয়্যারে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রথম ও শেষ ১০ মিনিট ইন্টারনেট সংযোগের মধ্যে থাকতে হবে। অ্যাপসটি ওপেন করার পর শিক্ষার্থীর মোবাইলের ক্যামরার কন্ট্রোল এবং সঙ্গে সাউন্ডেরও কন্ট্রোল এডমিন নিয়ে নেবে। মোবাইলের স্ক্রিন কন্ট্রোলও থাকবে এডমিনের হাতে।

উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীরা অনলাইনে থেকে যখন অ্যাপসটি অন করবে তখন আমরা তাদের লাইভ মনিটরিং করতে পারব। অফলাইনে থাকলে ছবি এবং সাউন্ড রেকর্ড করা থাকবে। এটা পরবর্তী সময়ে আমাদের সার্ভারে চলে আসবে। তখন আমরা বুঝতে পারব তিনি নকল করেছে কি না। এই অ্যাপসের মাধ্যমে এমসিকিউ ও লিখিত দুই ভাবেই পরীক্ষা নেওয়া যাবে বলে জানান অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর।

তিনি আরো বলেন, স্ক্রিন শট নিয়ে মেসেঞ্জার, হোয়াটস আপ বা ভাইভার বা অন্য কোনো অ্যাপে পরীক্ষার্থী প্রশ্নগুলো পাঠিয়ে দিলে সেটা ধরা যাবে। কোনোভাবে ঐ সফটওয়্যার মিনিমাইজ করার চেষ্টা করলে তাকে ওয়ার্নিং দেওয়া হবে। বন্ধ করে দিলে পরীক্ষা শেষ হবে। আর সে পরীক্ষায় প্রবেশ করতে পারবে না। অন্য ডিভাইসেও করতে পারবে না। যেহেতু তাকে প্রতিটি মুহূর্তে মনিটরিং করা হচ্ছে। এ কারণে সব কিছু সার্ভারে রেকর্ড হয়ে থাকবে।

তবে এই পদ্ধতির নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে এমনটি মনে করছেন আইটি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবী খুঁজতে গিয়ে যাতে উলটো ফল না হয়, সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অভিভাবকরা। তারা বলছেন, ইন্টারনেট যোগাযোগ এখনো গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি বিশাল সমস্যা। একযোগে অনেক পরীক্ষার্থী এবং অবাধ ইন্টারনেট সংযোগ একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হতে পারে। প্রথমে ১০ মিনিটও যদি কোনো কারণে ইন্টারনেট সংযোগের মধ্যে পরীক্ষার্থী না থাকতে পারে তাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

হাবিবুল হাসান নামে এক অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, এইচএসসিতে উত্তীর্ণ ১৩ লাখ ৬৫ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে কত ভাগের স্মার্ট ডিভাইস আছে—এ নিয়ে কোনো জরিপ নেই। তাছাড়া গত বছরের অনেকেই এবার পরীক্ষা দিতে পারে কোনো কোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এক তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর ১৪ শতাংশের কোনো স্মার্ট ফোন নেই। এ থেকেও অনেকটা ধারণা পাওয়া যায়। তিনি বলেন, উন্নত দেশে অনলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষা হয়। কিন্তু উন্নত দেশে বিদ্যুতের সমস্যা নেই, প্রায় সবার পিসি বা ল্যাপটপ আছে, আর সেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট খুবই সহজলভ্য। তবে বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। এখানে প্রযুক্তি ব্যবহারের জ্ঞানও কম। বিশেষত এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এ ধরনের জ্ঞান আরো সীমিত।

এছাড়া এই পরীক্ষায় অন্যতম প্রধান সমস্যা নকল করার সুযোগ। মোবাইল ক্যামেরার সীমানার বাইরে কাছে থেকে মোবাইল স্ক্রিন দেখে প্রশ্নের উত্তর বলে দেওয়া সম্ভব। উত্তরগুলো লিখে মোবাইলের পাশ ঘেঁষে রেখে দিলেও এডমিন কোনোভাবেই এই নকল ধরতে পারবে না। এভাবে কয়েক জন মেধাবীকে পাশে বসিয়ে রেখে পরীক্ষার শতভাগ উত্তর দেওয়া সম্ভব। এতে প্রকৃত মেধাবীরা বঞ্চিত হবে।

আতিউর রহমান নামের একজন অভিভাবক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সরাসরি নেওয়া যায় কি না, সেটা নিয়ে ভাবা যেতে পারে। প্রয়োজনে সারাদেশকে ব্যবহার করা হোক। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নয়, দেশের সবগুলো স্কুল বা কলেজ কেন্দ্র ব্যবহার করা যেতে পারে।

অন্যরকম সফটওয়্যারের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া ভালো পদ্ধতি। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটা কতটা কার্যকর হবে এটা বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করার আগে একাধিক পাইলটিং করতে হবে।’

 

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040810108184814