অবশেষে প্রবেশপত্র পেলো সেই পরীক্ষার্থীরা, প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি (ভিডিও) - দৈনিকশিক্ষা

দিনভর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে কান্নাঅবশেষে প্রবেশপত্র পেলো সেই পরীক্ষার্থীরা, প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রোববার দিনভর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে কান্নাকাটির পর প্রবেশপত্র পেলো ধামরাইয়ের যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই ৩৭জন পরীক্ষার্থী। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত দশটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২০জন শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র হাতে পেয়েছেন। প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আলী হায়দারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অবশেষে যাদবপুর বিএম হাই স্কুল থেকে উত্তরণ প্রি ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুল, খোরশেদ নগর পাবলিক স্কুল ও সৈকত মডেল স্কুলসহ বেশ কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন

অবশেষে প্রবেশপত্র পেলো সেই পরীক্ষার্থীরা

ঢাকা বোর্ডের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, যেসব শিক্ষার্থীরা বিধি মোতাবেক নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ফরমপূরণ করেছেন তাদের অ্যাডমিট কার্ড দেয়া হবে। তবে, যারা টেস্ট পরীক্ষায় পাস করেনি বা ফরম পূরণ করেনি তারা অনৈতিকভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দাবি করছে। এসব পরীক্ষার্থীতে অ্যাডমিট কার্ড দেয়া হবেনা।

এদিকে অ্যাডমিট কার্ড হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, যাদবপুর বিএম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলী হায়দার এ সমস্যার জন্য দায়ী। তিনি আমাদের ফরমপূরণ করিয়ে। পরে জটিলতা দেখা দিলে তিনি সটকে পড়েন। তার কোনও খোঁজ খবর পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জানাচ্ছি। এসময় তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।  

আরও পড়ুন: প্রবেশপত্রের দাবিতে ঢাকা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভীড় (ভিডিও)

মতামত জানার চেষ্টা করেও আলী হায়দারকে পাওয়া যায়নি।  আলী হায়দার পলাতক বলে জানা গেছে। তাকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ঢাকা বোর্ড। 

এর আগে এসএসসি পরীক্ষা শুরু আগের দিন রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে প্রবেশপত্রের দাবিতে শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে অবস্থান নেন। বোর্ড থেকে তাদের প্রবেশপত্র দেয়া হবে না জানিয়ে দেয়া হলে তারা বোর্ডের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত বোর্ডের সব কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। বিকেল পাঁচটায় অফিস শেষ হলেও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত গাড়ী নিয়ে বের হতে পারেন নি কর্মকর্তারা। পরে পুলিশ ডাকা হয়। 

প্রবেশপত্র না পাওয়া কয়েকটি স্কুলের মধ্যে ঢাকা ধামরাইয়ের যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয় একটি। স্কুলটির ৩৭ জন পরীক্ষার্থী এসময় জানান, তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ফরম পূরণ করেছে। টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তারা উত্তরণ প্রি ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুল, খোরশেদ নগর পাবলিক স্কুল ও সৈকত মডেল স্কুল এবং যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কিন্তু বোর্ড কর্মকর্তারা বলেছেন, অবৈধভাবে ফরম পূরণ করা ৩৭ জন শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র পাওয়ার দাবিতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে অবস্থান নেয়। 

এ নিয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে বিষয়টি সরকার ও শিক্ষা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের নজরে আসে। এর কিছুক্ষণ পরই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের নিজ কার্যালয়ে ডেকে নেন। সেখানে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রশন কার্ডসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করা হয়। যাচাই শেষে যেসব শিক্ষার্থী  বিধি মোতাবেক নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ফরমপূরণ করেছেন তাদের অ্যাডমিট কার্ড দেয়া হয়। রোববার পরীক্ষা শুরু আগের দিন রাত দশটা পর্যন্ত যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০জন পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র হাতে পেয়েছেন। এসময় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা জানান বাকিরাও প্রবেশপত্র পাবেন। এ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের জটিলতা নিরসন হয়েছে।

জানা যায়, প্রবেশপত্র না পাওয়ায় রোববার দুপুর থেকে তারা ঢাকা বোর্ডে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শতাধিক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দাবি তারা বৈধ শিক্ষার্থী এবং টেস্টে পাস করেছেন। কিন্তু বোর্ড বলছে তারা অবৈধ। স্কুলের অনুমোদন নেই। সময়মতো ও নিয়ম অনুযায়ী ফরম পূরণ করেনি। শুধু শুধু প্রবেশপত্র নিতে এসেছে। এসময় যাদবপুর বিএম হাই স্কুলের পরীক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেছেন তারা ফরম পূরণ করেছেন এবং টেস্টে পাস করেছেন।

খিলগাও মডেল স্কুল ও মাতুয়াইল স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকেও কান্না করতে দেখা যায়। এছাড়া টিসি নিয়ে বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি হওয়া বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে বোর্ডে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। পরিচয় গোপন করে এ ধরণের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করে অন্য স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার চেষ্টা করছেন। এ জন্য মোটা অংকের টাকাও দিয়েছেন শিক্ষকদের।  

এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে বোর্ডে আসা কয়েকজন শিক্ষকের সাথে পরিচয় গোপন করে কথা বললে তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমের এ প্রতিবেদককে জানান, বোর্ডের কর্মচারীদের সাথে টিসি নেয়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার বিষয়টি ম্যানেজ করার জন্য কথা হয়েছে। তারা মোটা অংকের টাকাও নিয়েছেন। কিন্তু পরে প্রবেশপত্র না আসায় তারা রোববার বোর্ডেও আসেননি। এ সময় কর্মচারীর নাম জিজ্ঞেস করলে তারা তা বলেননি। 

এদিকে দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান শামীমসহ অনেকেই ভীড় জমান বোর্ডে। শামীম নিজেই বরখাস্ত, আবার বোর্ডে গিয়েছেন অবৈধ দাবি নিয়ে। শামীমকে সহায়তা করার অভিযোগ পাওয়া যায় বিএনপিপন্থী একটি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।  

জানা যায়, টেস্টে ফেল করা ও নকলের দায়ে বহিষ্কার হওয়া ২২ জন শিক্ষার্থীকে বিপুল টাকার বিনিময়ে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার চুক্তি হয়। এই চুক্তির অংশ হিসেবে ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ভীড় জমান দক্ষিণ বনশ্রী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান শামীম। অবৈধ দাবি নিয়ে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমীরুল ইসলামের কক্ষে প্রবেশ করলে তিনি অধ্যক্ষকে বের হয়ে যেতে বলেন। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

এর আগে গত বছরের মে মাসে বলাৎকারের অভিযোগে চার বছরের বেশি সময় ধরে বরখাস্ত থাকা দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন শিক্ষককে চাকরিতে পুনর্বহাল ও নিয়মিত বেতন ভাতা দেয়ার নির্দেশ দেয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এছাড়া কলেজটির সভাপতি আওয়ামী লীগের সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরীর স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ মো. সিদ্দিকুর রহমান শামীমকেও চাকরিতে পুনর্বহাল করার তদবির শুরু হয়েছে।

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049939155578613