সারা দেশে ২০১৯ সালে ২৭৩০টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয় এমপিও নীতিমালা ২০১৮-এর ২৪.১ ধারা অনুসরণে। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এইচএসসি (বিএম) কলেজের স্পেশালাইজেশন (ট্রেড) এমপিওভুক্তিতে ২৪.১-এর ৪ নম্বর সূচকটি ভুল প্রয়োগ। এর ফলে সারা দেশে অসংখ্য কলেজের অনেক ট্রেড যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এমপিওভুক্ত হতে পারেনি। এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (সংশোধিত-২০২০, ধারাটি অপরিবর্তিত)-এ, ২৪.১ ধারার চারটি সূচকের (২৫x৪= ১০০) মানের ভিত্তিতে গ্রেডিং করে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এর ৪ নম্বর সূচকটি হলো উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রী সংখ্যা। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে আরও জানা যায়, ট্রেড এমপিওভুক্তিতে ছাত্রছাত্রীদের পাসের হার বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ট্রেড ও ট্রেড বিষয় দুটি ভিন্ন ধারণা। এইচএসসি (বিএম) কলেজে আবশ্যিক বিষয় আটটি, ট্রেড বিষয় একটি ও ঐচ্ছিক বিষয় একটির মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করা হয়। কম্পিউটার ট্রেডের আসন সংখ্যা ৪০। সবাই যদি কম্পিউটার ট্রেড বিষয়ে পাস করে, কিন্তু আবশ্যিক বিষয় আটটির যে কোনো বিষয়ে ফেল করে, তবে কম্পিউটার ট্রেডের পাসের হার শূন্য হবে। এক্ষেত্রে ট্রেড বিষয় বা ট্রেড শিক্ষকের কোনো হাত নেই।
অথচ এ সূচকের মাধ্যমে ট্রেড এমপিওভুক্ত করা হয়েছে এবং সংশোধিত নীতিমালা-২০২০-এ তা বহাল আছে। এ ধারায় সব বিষয়ের পাসের দায়ভার ট্রেড শিক্ষকের ওপর চাপানো হয়েছে। সাধারণ কলেজে মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ এমপিওভুক্তি বা এসব বিভাগের পাসের হার বিবেচনা করা হয় না। আর একটা বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন—এইচএসসি (বিএম) কলেজগুলোতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে কম্পিউটার আবশ্যিক বিষয়, যা ছাত্রছাত্রীদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কিন্তু জনবল কাঠামোতে অবশ্যিক কম্পিউটার বিষয়ে কোনো শিক্ষক নেই। বিষয়টি কম্পিউটার ট্রেড শিক্ষক পড়ান। কিন্তু শিক্ষক এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে ট্রেড এমপিওভুক্তির শর্ত দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে অসংখ্য বিএম কলেজে কম্পিউটার ট্রেড চালু না থাকায় এবং জনবল কাঠামোতে আবশ্যিক বিষয়ের কোনো পদ না থাকায়, শিক্ষক ছাড়াই ছাত্রছাত্রীদের কম্পিউটার বিষয়টি শিখতে হচ্ছে। আবশ্যিক কম্পিউটারের শিক্ষক পদ সৃষ্টি করা হোক। নতুবা, কম্পিউটার পাঠদানকারী শিক্ষককে বাংলা-ইংরেজির শিক্ষকের মতো সরাসরি এমপিওভুক্ত করা হোক। পরিশেষে, বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (সংশোধিত ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০)-এর অসঙ্গতিগুলো দূর করতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক : শেখ আবু জাফর, প্রভাষক (কম্পিউটার অপারেশন), সাতক্ষীরা।