ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা প্রশ্ন করা হয়নি - দৈনিকশিক্ষা

চবি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে ভুলইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা প্রশ্ন করা হয়নি

চবি প্রতিনিধি |

জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন প্রণয়নে ভুল থাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। জাতীয় পাঠ্যক্রমে বাংলা মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থী এবং ব্রিটিশ কারিকুলামে পড়া শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করা হলেও জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদাভাবে প্রশ্ন করা হয়নি। যা ভর্তি পরীক্ষার আগে ধরতে পারেনি ভর্তি কমিটি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একে ‘টেকনিক্যাল’ সমস্যা হিসেবে অখ্যা দিয়ে ওইসব পরীক্ষার্থীদের ফের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিলেও মূলত ডি ইউনিট ভর্তি কমিটির দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার চবির ডি ইউনিট ভর্তি কমিটির কো-অর্ডিনেটর ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষা অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক।

প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা প্রশ্ন প্রণয়নের পর তার নেতৃত্বাধীন ভর্তি কমিটির কাছে প্রশ্ন হস্তান্তর করেন। তবে ভর্তি কমিটি এসব প্রশ্ন যথাযথ নিয়মে করা হয়েছে কী না- তা যাচাই না করেই ছাপানোর জন্য প্রেসে পাঠিয়ে দেয়।

ফলে জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নে যে ভুল ছিলো তা কারও কাছে ধরা পড়েনি। এমনকি ভর্তি পরীক্ষার পরেরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ভর্তি কমিটির কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক এ ভুলের কথা জানতেন না!

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে জানান, ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে প্রতিটি ইউনিটে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের নিয়ে একটি ভর্তি কমিটি গঠন করা হয়। ডিনদের মধ্য থেকে একজনকে এ কমিটি কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা এ কমিটির কাছেই প্রশ্ন জমা দেন। কমিটি ভুল-ত্রুটি দেখে প্রেসে ছাপানোর ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে হলে হলে প্রশ্ন পাঠানো, ফলাফল তৈরিসহ ভর্তি সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন করেন। এর কোনো একটি পর্যায়ে ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলেই সমস্যা তৈরি হয়।

জানা গেছে, চবির ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রতি ইউনিটে তিন ধরনের প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়। এর মধ্যে প্রথমটি জাতীয় পাঠ্যক্রমে বাংলা মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য। এ প্রশ্নে শুধু ইংরেজি অংশের প্রশ্ন ইংরেজিতে হয়ে থাকে। বাকি সব প্রশ্ন বাংলায় করা হয়।

দ্বিতীয়টি জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য। এ প্রশ্নে শুধু বাংলা অংশের প্রশ্ন বাংলায় করা হয়। বাকি সব প্রশ্ন ইংরেজিতে থাকে। তৃতীয়টি ব্রিটিশ কারিকুলামে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য। এ প্রশ্নে সব বিভাগের প্রশ্ন ইংরেজিতে করা হয়।

এবার চবির ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় পাঠ্যক্রমে বাংলা মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থী এবং ব্রিটিশ কারিকুলামে পড়া শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করা হলেও জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদাভাবে প্রশ্ন করা হয়নি। যা ভর্তি পরীক্ষার আগে ধরতে পারেনি ভর্তি কমিটি।

ফলে বৃটিশ কারিকুলামে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য করা প্রশ্নেই জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। আর এতে বিপাকে পড়েন এ মাধ্যম থেকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী। আটকে যায় পরীক্ষার ফলাফল।

ভর্তি কমিটির দায়িত্ব পালনে অবহেলার বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, এটা আমাদের নিজেদের ভুল। যেভাবেই হোক আমি বিষয়টি আগে জানতে পারিনি। বিষয়টি আমাকে জানানোও হয়নি।

তিনি বলেন, আমি ভুলের বিষয়টি জেনেছি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার একদিন পর ২৯ তারিখ রাত সাড়ে ৭টার দিকে। উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ম্যাডামই প্রথমে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন।

‘আমি পরীক্ষার প্রশ্ন আগে চেক না করায় বিষয়টি আমার অজানা ছিল। তবে পরীক্ষার সময় বিষয়টা জানার পরেও আমাকে ইনফর্ম না করাটা অবশ্যই ঠিক হয়নি।’ বলেন এ অধ্যাপক।

প্রসঙ্গত, ২৮ অক্টোবর দুই শিফটে চবির ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ৪৪ হাজার ৯৯০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। ২৯ অক্টোবর বিকেলে ডি ইউনিটের ভর্তি ফলাফল ঘোষণার কথা থাকলেও রাত ৯টার পর ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, ৬ নভেম্বর জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর ফের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার পর ডি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে।

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040929317474365