উপাচার্যহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় - দৈনিকশিক্ষা

উপাচার্যহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য না থাকলে তা নিয়ে যতটা তোলপাড় হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সেটা দেখা যায় না বললেই চলে। অথচ বেসরকারি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যসহ ওপরের দিকের অনেক পদই খালি রয়েছে। সম্প্রতি আচার্যের অনুমোদনক্রমে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বনির্ধারিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও মহামান্য রাষ্ট্রপতি নিয়োগকৃত 'উপাচার্য', 'উপ-উপাচার্য' ও 'কোষাধ্যক্ষ' কর্তৃক পরিচালিত না হওয়ায় অনুষ্ঠানে উপস্থিতি বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী অপারগতা প্রকাশ করে প্রশংসার যোগ্য কাজ করেছেন। এভাবে কি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে? পত্রিকায় প্রকাশ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ তথ্যমতে, বর্তমানে একাডেমিক কার্যক্রম চলছে এমন ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮টিতে উপাচার্য নেই; ৮২টিতে উপ-উপাচার্য নেই এবং ৫৫টিতে কোষাধ্যক্ষ নেই। আর উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ কেউ নেই এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ২০টি। তিনটি পদ পূর্ণ আছে এমন বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র ১০টি (কালের কণ্ঠ, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৯)। অথচ প্রচলিত আইন হলো, যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মহামান্য রাষ্ট্র্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ পদে জনবল সার্বক্ষণিক থাকা অপরিহার্য। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, এটি ভালো যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি অনেক দিন ধরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ম-শৃঙ্খলায় আনার চেষ্টা করছে। তবে দুঃখজনক বিষয়, 'বোর্ড অব ট্রাস্টিজ' বা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সঙ্গে সংযুক্ত ব্যক্তিবর্গ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত ও ইতিবাচক কিছু করা যাচ্ছে না। প্রায় প্রতি বছর ইউজিসি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বেসরকারি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সতর্কতা জারি করে থাকে। এতে একদিকে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইউজিসির দৈন্যও প্রকাশ পায় এই অর্থে যে, তারা এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক কিছু করতে পারছে না। আদালতে রিট করে হোক আর যেভাবেই হোক ওই সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকই শিক্ষার্থী ভর্তি করে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। আর প্রয়োজন যেহেতু কোনো আইন মানে না, তাই কিছু শিক্ষার্থী যে কোনো কারণেই হোক ভর্তি হয়ে থাকে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিকভাবে প্রতিষ্ঠিত নিয়ম হলো, মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া উপাচার্য ব্যতীত শিক্ষার্থীদের সনদপত্রে অন্য কেউ স্বাক্ষর করতে পারেন না। তার স্পষ্ট অর্থ হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বোর্ড অব ট্রাস্টিজ' কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের স্বাক্ষর করা সনদপত্র বৈধ নয়। এখন প্রশ্ন, 'উপাচার্য', 'উপ-উপাচার্য' ও 'কোষাধ্যক্ষ' পদে 'ভারপ্রাপ্ত' হিসেবে কাউকে নিয়োগ দেওয়ার এখতিয়ার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বা রিজেন্ট বোর্ডের না থাকলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সেই এখতিয়ার আছে কি? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সুবিধা হলো, 'উপাচার্য', 'উপ-উপাচার্য' ও 'কোষাধ্যক্ষ'- প্রত্যেক পদে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বোর্ড অব ট্রাস্টিজ' কর্তৃক প্রস্তাবিত তিনজনের নাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি একজনকে পরবর্তী চার বছরের জন্য নিয়োগ দেন। পছন্দমতো কাউকে নিয়োগ প্রদানে সুবিধা বেশি থাকায় এ নিয়মটি পরিপূর্ণভাবে তাদের অনুসরণ করা উচিত। বাংলাদেশের তুলনামূলক পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শত শত অধ্যাপক আছেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার গভীরতার ওপর যদিও নির্ভর করে সবকিছু। তবে সার্চ কমিটি করে হোক আর যেভাবেই হোক, অতি দ্রুত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্য পদগুলো পূরণ করা জরুরি। পাশাপাশি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে যেন 'কোষাধ্যক্ষ' পদটি পূরণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকলে হতাশার পাশাপাশি একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে যে প্রভাব ও ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়, তা উচ্চশিক্ষার জন্য কল্যাণকর নয়।

লেখক : মোহাম্মাদ আনিসুর রহমান, শিক্ষক, বশেমুরবিপ্রবি, গোপালগঞ্জ।

ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037331581115723