ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ।
তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
আজ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার। ৩০ মাঘ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনা
১৫০২- ভাস্কো দা গামা পর্তুগালের লিসবন থেকে ভারতের দিকে তার দ্বিতীয় নৌ যাত্রা শুরু করেন।
১৫৫৪- নয়দিন ধরে ইংল্যান্ডের সিংহাসন দাবির এক বছর পর লেডি জেন গ্রেকে রাজদ্রোহিতার অভিযোগে শিরশ্চ্ছেদ করা হয়।
১৮৩২- ইকুয়েডর গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ একীভূত করে।
১৯২১- জর্জিয়ায় বলশেভিকদের বিদ্রোহ শুরু।
১৯৬১- শুক্র গ্রহের দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেনেরা-১ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করে।
জন্ম
১৫৬৭- ব্রিটিশ সুরকার ও কবি থমাস চেম্পিয়ন।
১৭৯৪- রুশ দাবাড়ু ও সুরকার আলেক্সান্ডার পেত্রভ।
১৮০৯- ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানী, বিবর্তনবাদের জনক চার্লস ডারউইন।
যুক্তরাজ্যের সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। তার বাবা ছিলেন নামকরা চিকিৎসক। তিনিই প্রথম প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিবর্তনবাদের ধারণা দেন। তিনিই সর্বপ্রথম অনুধাবন করেন সব ধরনের প্রজাতিই কিছু সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে এবং তার এ পর্যবেক্ষণটি সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাণিজগতের শাখা-প্রশাখায় ভাগ হওয়ার বিষয়টাকে তিনি প্রাকৃতিক নির্বাচন হিসাবে অভিহিত করেন।
তার জীবদ্দশাতেই বিবর্তনবাদ একটি তত্ত্ব হিসাবে বিজ্ঞানী সমাজ ও অধিকাংশ সাধারণ মানুষের কাছে স্বীকৃতি লাভ করে। তবে ১৯৩০ থেকে ১৯৫০ সালের দিকে আধুনিক বিজ্ঞানীরা বিবর্তনিক সংশ্লেষের মাধ্যমে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক নির্বাচনের গুরুত্ব আরও ভালোভাবে অনুধাবন করা সম্ভব হয়। ডারউইনের আরেকটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার- জীববিজ্ঞানের একত্রীকরণ তত্ত্ব, যা জীববৈচিত্র্যের ব্যাখ্যা দেয়। ১৮৮২ সালের ১৯ এপ্রিল ডারউইন মৃত্যুবরণ করেন। ডারউইনকে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে বিজ্ঞানী জন হার্শেল ও আইজ্যাক নিউটনের সমাধির পাশে সমাহিত করা হয়।
১৮০৯- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকন।
১৮৬১- মার্কিন ফটোগ্রাফার ফ্রাঙ্ক রিনহার্ট।
১৮৯৭- মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী লিংকন লাপাজ।
১৯৪২- ইসরায়েলি জেনারেল, রাজনীতিবিদ ও ১০ম প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক।
১৯৪৩- বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস।
গাইবান্ধার গোটিয়া গ্রামে তার জন্ম। তার বাবা বদিউজ্জামান মুহম্মদ ইলিয়াস ছিলেন পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং মুসলিম লীগের পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি। আখতারুজ্জামান জগন্নাথ কলেজে লেকচারার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তারপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের উপ-পরিচালক, সংগীত মহাবিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ, মফিজউদ্দীন শিক্ষা কমিশনের বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা কলেজে অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
তিনি কথাসাহিত্যিক হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। তার লেখায় সমাজবাস্তবতা ও কালচেতনা গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। বিশেষত, তার রচনাশৈলীর ক্ষেত্রে যে স্বকীয় বর্ণনারীতি ও সংলাপে কথ্যভাষার ব্যবহার লক্ষণীয়, তা সমগ্র বাংলা কথাশিল্পে অনন্য সাধারণ। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি রচনা হলো- অন্যঘরে অন্যস্বর (১৯৭৬), খোঁয়ারি (১৯৮২), দুধভাতে উৎপাত (১৯৮৫), চিলেকোঠার সেপাই (১৯৮৭), দোজখের ওম (১৯৮৯), খোয়াবনামা ১৯৯৬), সংস্কৃতির ভাঙা সেতু ইত্যাদি। এর মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়- চিলেকোঠার সেপাই ও খোয়াবনামা।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার ও কলকাতার ‘আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ১৯৯৭ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন এ কথাসাহিত্যিক।
১৯৯১- জার্মান ফুটবলার পেট্রিক হারমান।
মৃত্যু
১৮০৪- জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট।
১৯১৬- জার্মান গণিতবিদ রিচার্ড ডেডেকিন্ট।
১৯৩৪- ব্রিটিশবিরোধী বাঙালি বিপ্লবী সূর্য সেন।
১৯৪৭- মার্কিন রসায়নবিদ মোসেস গোমবার্গ।
১৯৬০- জার্মান গণিতবিদম অস্কার এন্ডারসন।
১৯৬১- বাঙালি সাহিত্যিক এবং বিশিষ্ট আইনজীবী অতুলচন্দ্র গুপ্ত।
১৯৭৫- সাম্যবাদী ধারার বাঙালি কবি মহীউদ্দিন।
১৯৮২- মার্কিন অভিনেতা ভিক্টোর জোরি।
২০১৪- ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ ও লেখক জন পিকস্টোন।
