নীলফামারীর সৈয়দপুরে সোনাখুলী মুন্সীপাড়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের ৬টি জন্মতারিখ ধরা পড়েছে। শিক্ষা সনদ নিয়ে আপত্তি তোলা হলে জন্মতারিখের বিষয়টি বের হয়। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা গেছে, অধ্যক্ষ আ ব ম মনসুর আলী সোনাখুলী মুন্সীপাড়া কামিল মাদ্রাসায় যোগদানের আগে নীলফামারী সদর উপজেলা কাজিরহাট ফাজিল মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে ৩ বছর চাকরি করেন। সে সময় তার জন্মতারিখ দেখানো হয় ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি। আবার ফাজিল স্পেশাল পরীক্ষা পাস করেন ১৯৮০ সালে। এখানে জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয় ১৯৫৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। আর সোনাখুলী মুন্সীপাড়া কামিল মাদ্রাসার ১৯৯৩ সালের বেতনের সরকারি অংশ উত্তোলন বিলে জন্মতারিখ ১৯৫৭ সালের ১ মার্চ লেখা হয়। এরপর নীলফামারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত পরিদর্শন প্রতিবেদনে জন্মতারিখ ১৯৬০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি উল্লেখ করা হয়। আবার ১ মার্চ ১৯৬১ উল্লেখ করা হয়েছে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসের এমপিও শিটে। অন্যদিকে জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ রয়েছে ১৯৬১ সালের ১ জানুয়ারি।
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, তার আলিম পরীক্ষার সনদের ওপরে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা লেখা বাক্যটিতে ঢাকা শব্দটি ইংরেজিতে Dacca লেখা রয়েছে। কিন্তু তার আগে পাস করা দাখিল পরীক্ষার সনদটির ওপরে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা লেখা বাক্যটিতে ঢাকা শব্দটির ইংরেজি DHAKA লেখা রয়েছে।
অথচ ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সরকার গেজেট প্রকাশ করে ইংরেজি Dacca বানান পরিবর্তন করে Dhaka করে। অর্থাৎ এর আগে ইংরেজিতে ঢাকা বানান Dacca লেখা হতো। এতে প্রতীয়মান হয়, তিনি দাখিল ও আলিম পরীক্ষার সনদে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। এসব বিষয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা শাখা ১-এর সহকারী সচিব মো. আবদুল খালেক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ ব ম মনসুর আলীকে যোগদানের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত উত্তোলনকৃত সরকারি বেতনভাতা ফেরতের নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই নির্দেশ অমান্য করে তিনি এখন পর্যন্ত অর্থাৎ গত মে মাসেরও সরকারি বেতনভাতা উত্তোলন করেছেন। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করেও অধ্যক্ষকে পাওয়া যায়নি।