এক বিষয়ে পরীক্ষা না দিয়েই ঢাবির সনদ! - দৈনিকশিক্ষা

এক বিষয়ে পরীক্ষা না দিয়েই ঢাবির সনদ!

ঢাবি প্রতিনিধি |

পূর্ণ পরীক্ষা না দিয়েই স্নাতকোত্তর পাসের সনদ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী। খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে এই সনদ দেয়া হয়েছে।

ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর (সেশন ২০১৬-১৭) শ্রেণির ছাত্র সানাউল্লাহ। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। পরীক্ষা চলাকালীন গত বছরের (২০২১ খ্রিষ্টাব্দের) ২৯ জানুয়ারি সানাউল্লাহর মা মারা যান। এসময় তিনি তার গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। ফলে ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত 'ভূরাজনীতি ও বাংলাদেশ' বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি তিনি। পরে ঢাকায় ফিরে বাকি পরীক্ষায় অংশ নেন সানাউল্লাহ। তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে পরের বছর পরীক্ষা দিয়ে তাকে পাস করতে হবে। তবে, ফল প্রকাশের পর দেখা যায় সানাউল্লাহ পরীক্ষায় পাস করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার নামে মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট এবং সাময়িক সনদপত্র ঢাকা কলেজে পৌঁছেছে।

এরপর সানাউল্লাহ যোগাযোগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসে। সেখান থেকে বলা হয় পরের বছর বিশেষ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করতে হবে তাকে।

সানাউল্লাহ বলেন, আমি তো একটি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশই নেইনি। পরে দেখি আমি পাস করেছি। আমার সন্দেহ হয়, এরপর আমি ঢাবিতে যোগাযোগ করি। সেখান থেকে বলা হয় বিশেষ পরীক্ষায় অংশ নিতে। কিছুদিন আগে আমি ওই বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। এখনও ফল প্রকাশ হয়নি।

গত ২০ মার্চ ওই বিষয়ে বিশেষ মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নেন সানাউলাহ। যদিও তার পাসের সনদ ঢাকা কলেজে!

এই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. স ম আলী রেজা। তিনি একই সঙ্গে এ পরীক্ষার টেবুলেটর ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম। পরীক্ষা কমিটির সভাপতি বলেন, ওটা একটু ভুল হয়ে গেছে। হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে তো এরকম ভুল মাঝে মধ্যে হয়৷ আমরা এটা সংশোধন করি। কন্ট্রোলার অফিস অসতর্কতায় মার্কসিট প্রোভাইড করে ফেলেছে। একটা ভুল হয়েছে, ওটা এখন উইথড্র করতে হবে।

ওই শিক্ষার্থীর কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অংশ নেয়ার প্রবেশপত্রে মোট ৯টি বিষয়ের নাম উল্লেখ আছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো মূল গ্রেড সার্টিফিকেটে মোট ৮টি বিষয়ের নাম উল্লেখ করা আছে। সানাউলাহ যে বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেননি সেই বিষয়ের নাম উল্লেখ নেই। বাকি আটটি বিষয় উল্লেখ করেই ফল পাস আর জিপিএ ২ দশমিক ৭০ দেখানো হয়েছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে সাময়িক সনদপত্রটি ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বর তারিখে ইস্যু হয়েছে।

এই ঘটনার দায় কার?- এমন প্রশ্নের জবাবে ওই পরীক্ষা কমিটির টেবুলেটর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম বলেন, একটু ভুল তো হয়েছেই ডেফিনেটলি। এরকমটা আসলে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে বা আমাদেরও রেগুলার যেগুলো আছে এগুলোতে টুকটাক হয়ে থাকে। পরে আমরা সংশোধন করে দেই। একটা ভুল হতেই পারে। সেটা আমরা সংশোধন করে দিয়েছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাবির উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিষয়টা আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখছি। ভুল কোথায়? যাদের মাধ্যমে ভুল হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এ ধরনের ভুল হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারা ফল তৈরি করলো, সংশ্লিষ্ট কে কে আছেন, এগুলো দেখার সুযোগ আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036859512329102