এখনো পাঠক টানে রাজশাহীর লাইব্রেরিগুলো - দৈনিকশিক্ষা

এখনো পাঠক টানে রাজশাহীর লাইব্রেরিগুলো

রাজশাহী প্রতিনিধি: |

বই নাকি মানুষের বন্ধু। বই পড়া নেশা। অবসর সময়ে বই পড়ার মজাটা কেড়েছে প্রযুক্তি। ব্যস্ততার যুগে বই পড়ার সময় হয়ে উঠেনা মানুষের। প্রয়োজনে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এক ঝলক দেখে নেন চাহিদামাফিক। তবে সবকিছু ঝাঁপিয়ে রঙিন মলাটের সাদা কাগজে, কালো লেখা এখনো পাঠক টানে। বই পড়ার মজাই আলাদা। সেই স্বাদ পেতে গ্রন্থাগার ও লাইব্রেরিগুলোতে ছুটে আসছে পাঠকরা।

গ্রন্থাগার ও লাইব্রেরির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, বইয়ের প্রতি মানুষের এখনো ভালোবাসা আছে। তাই সকাল হলেও ছুটে আসে বই প্রেমি পাঠকরা। 

রাজশাহীতে গ্রন্থাগার ও লাইব্রেরির মধ্যে রয়েছে, রাজশাহীর বিভাগীয় সরকারি গ্রন্থাগার, রাজশাহীর সাধারণ গ্রস্থাগার, শাহমখদুম ইনষ্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরি, জননী গ্রন্থাগার ও সাংস্কৃতিক সংস্থা এবং পদ্মা লাইব্রেরি।

পাঠকরা দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, বই জ্ঞানের ভাষার। এখানে বিভিন্ন বয়সের পাঠক আসে। কেউ বই পড়ে সময় কাটায়। কেউ বা জ্ঞান অর্জনে বই পড়ে, কেউ বা চাকরির প্রস্তুতি হিসেবে বই পড়ছে। 

রাজশাহী বিভাগীয় সরকারি গ্রন্থাগার:
সরকারিভাবে চলে এটি। সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি। গ্রন্থাগারটিতে ১৩০টি সেল্ফে ৮৭ হাজার ৫১৮টি বই রয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকাও। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ১৫ খণ্ডের  দলিলসহ এখানে আছে বহু মূল্যের ইংরেজি বিভিন্ন বই যা অনেক পুরাতন ও বহু মূল্যবান। রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার। এখানে প্রতিদিন ৬০০ পাঠক আসে চাহিদা মতো বই পড়তে। যার মধ্যে পত্রিকার পাঠকও রয়েছে।  

রাজশাহী বিভাগীয় সরকারি গ্রন্থাগারের অফিস প্রধান আবু সাইদ দৈনিক শিক্ষাকে জানান, গ্রন্থাগারটিতে ১৩০টি সেল্ফে ৮৭ হাজার ৫১৮টি বই রয়েছে। প্রতিদিন ৬০০ পাঠক আসে চাহিদা মতো বই পড়তে। তিনি বলেন, আগের চেয়ে অনেক পাঠক হয় এখন। তবে শিশু পাঠক অনেক কম। কারণ তাদের অভিভাবকরা নিয়ে আসতে চায়না।  তবে জায়গার সঙ্কট রয়েছে। পাশে সরকারিভাবে ভবন তৈরির কথা রয়েছে। জনবল বাড়লে বই প্রেমিদের আরো বেশি সুবিধা দিতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।

গ্রন্থাগারটিতে রয়েছে বেশ কয়েকজন প্রবীণ পাঠকও। তাদের জন্য আলাদা টেবিল রয়েছে। মাসুদ রানা (৬৬) নামের এক পাঠক দৈনিক শিক্ষাকে জানান, ‘চাকরি শেষ। ’৮৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি রাজশাহীর বিভিন্ন গ্রন্থাগারে পড়াশোনা করেছেন। এখানেও তার ১০ থেকে ১২ বছর ধরে যাওয়া আসা। অবসরের বেশির ভাগ সময় এখানে কাটে তার। সপ্তাহের ছুটির দিনের সময়গুলো তার কষ্টে কাটে। তার কাছে বই পড়া নেশা।’ 

এসএম শামিমা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, ‘তিনি একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি এই গ্রন্থাগারে আসেন চাকরি পড়া পড়তে। প্রতিদিন সকাল ১০টায় আসে দুপুর ২টায় যান।’

এক ঝলকে রাজশাহীর কয়েকটি গ্রন্থাগার ও লাইব্রেরি: 
রাজশাহীর সাধারণ গ্রন্থাগারটি পাবলিক লাইব্রেরি নামে বেশ পরিচিত। ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে নগরীর মিঞাপাড়ায় স্থাপিত হয় এটি। ১৮৫০ এর দশকে ৪টি লাইব্রেরি গ্রন্থাগারের মধ্যে এটি একটি। গ্রন্থাগারটিতে প্রায় ৩৬ হাজার বই ও প্রায় ২০ হাজারের মত দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক পত্রিকা সংরক্ষিত রয়েছে। বর্তমানে লাইব্রেরিটির বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। গ্রন্থাগারটি সপ্তাহে বুধবার ছুটি থেকে। প্রতিদিন পাঠক হয় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন।

শাহমখদুম ইনষ্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরি:
শাহমখদুম ইনষ্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরি ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত হয়। এখানে বইয়েরও পত্রিকার সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজারের বেশি। এখানে দুর্লভ বই বলতে আরবি ফারসি উর্দূ যা ২ থেকে ২৫ হাজার আছে। দৈনিক ২৬টি সাপ্তাহিক ৩টি পত্রিকা টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করা হয়। কার্ডধারি, ইনস্টিটিউট ও শিশু এ তিন ধরনের সদস্য আছে। সপ্তাহে সোমবার সাপ্তাহিক ছুটি। প্রতিদিন পাঠক প্রায় ১০০ থেকে থেকে ১৫০ জন হয়।

জননী গ্রন্থাগার ও সাংস্কৃতিক সংস্থা:
নগরীর কয়েরদাঁড়া এলাকায় রয়েছে জননী গ্রন্থাগার ও সাংস্কৃতিক সংস্থা। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের ২১ জানুয়ারি এ গ্রন্থাগার উদ্বোধন করা হয়। এখানে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ বই ও পত্রিকা আছে। এ গ্রন্থাগারে অন্যরকম পাঠক আছে গৃহিনি পাঠক। তাদের বই নিজের বাসায় নিয়ে দেওয়া ও নিয়ে আসা হয়। 

পদ্মা লাইব্রেরী: 
নগরীর তালইমারি এলাকায় অবস্থিত পদ্মা লাইব্রেরি। এটি প্রতিষ্ঠা পায় ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ অক্টোবর।  লাইব্রেরির সাধারণ সদস্য রয়েছেন প্রায় ৮০০ জন। আর আজীবন সদস্য আছেন প্রায় ৫৫ জন। লাইব্রেরিতে সমৃদ্ধ করেছে প্রায় ৯ হাজারেরও বেশি বইপুস্তক। নেয়া জাতীয় ও স্থানীয় মিলে দৈনিক ১৫ থেকে ২০টি পত্রিকা। 

এছাড়া থাকে আরো ৪টি সাপ্তাহিক। লাইব্রেরিটির মর্যাদা অনেকাংশে বাড়িয়েছে সংরক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের ১৩ খণ্ডের দলিল। বর্তমানে সোয়া তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ তলা ভবনের নির্মাণের কাজ চলছে। 

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039489269256592