আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচিত ৫৫৭টি মাদরাসার তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে অনেক মাদরাসা বোর্ডে কাগজপত্রসহ উপস্থিত হতে পারেননি। তথ্য যাচাইয়ে ব্যর্থ মাদরাসাগুলোর কাগজপত্র আগামীকাল রোববার (৫ জানুয়ারি) যাচাই বাছাই করা হবে। সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে যাচাই কার্যক্রম। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, এমপিওভুক্ত মাদরাসার তথ্য যাইয়ে দুইটি সাবকমিটি গঠন করা হয়েছে। এ সাব কমিটি দুটি গত ১৮ থেকে ২৪ ডিসেম্বর মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচিত মাদরাসাগুলোর তথ্য যাচাই করেছে। এ যাচাই কাজে যেসব মাদরাসার প্রতিনিধিরা প্রমাণক কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত হতে পারেননি, তাদের কাগজপত্র আগামীকাল ৫ জানুয়ারি যাচাই বাছাই করা হবে। তাই, তথ্য যাচাইয়ে ব্যর্থ মাদারাসাগুলোর প্রতিনিধিদের কাগজপত্রসহ ৫ জানুয়ারি সকাল ১০টার মধ্যে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে আসতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, এমপিওভুক্ত দাখিল মাদরাসা তথ্য যাচাইয়ে ১ম স্বীকৃতি ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের স্বীকৃতির প্রমাণক, ভর্তির প্রমাণক, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও ফলাফল জমা দিতে হবে। আলিম মাদরাসার তথ্য যাচাইয়ে ১ম স্বীকৃতি ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের স্বীকৃতির প্রমাণক, ২০১৭ ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ভর্তির প্রমাণক ও শ্রেণিভিত্তিক ভর্তি রেজিস্ট্রার, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার্থীর প্রমাণক ও ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ফলাফল জমা দিতে হবে।
ফাযিল মাদরাসার তথ্য যাচাইয়ে ১ম স্বীকৃতি ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের স্বীকৃতির প্রমাণক, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ভর্তির প্রমাণক ও শ্রেণিভিত্তিক ভর্তি রেজিস্ট্রার, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার্থীর তথ্য ও ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ফলাফল জমা দিতে হবে। আর কামিল মাদরাসার ক্ষেত্রে ১ম স্বীকৃতি ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের স্বীকৃতির প্রমাণক, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ভর্তির প্রমাণক ও শ্রেণিভিত্তিক ভর্তি রেজিস্ট্রার, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার্থীর প্রমাণক ও ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ফলাফল জমা দিতে হবে।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এমপিওভুক্তি তথ্য যাচাইয়ে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হয়ে এসব কাগজপত্রের মূলকপি ও ১সেট ফটোকপি জমা দিতে হবে। এজন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের একজন উপযুক্ত শিক্ষকসহ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে আসতে বলা হয়েছে।
গত ১৪ নভেম্বর নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া মাদরাসা, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা কলেজগুলোর তথ্য যাচাই-বাছাই করতে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত এমপিও তালিকায় স্থান পাওয়া ১ হাজার ৭৬ টি মাদরাসা, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও বিএম কলেজের তথ্য যাচাই করবে এই কমিটি।
এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচিত ১ হাজার ৭৬টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য যাচাইয়ে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, মাদারাসা শিক্ষা বোর্ড এবং ব্যানবেইসের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে চারটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়। চারটির মধ্যে দুইটি সাবকমিটি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের তথ্য এবং দুইটি সাবকমিটি মাদরাসার তথ্য যাচাই-বাছাই করে। সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ব্যানবেইসের সফটওয়্যারের মাধ্যমে সরবরাহ করা তথ্যের যেসব প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওর তালিকা প্রকাশ করেছে সেগুলোও যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, নতুন এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের তালিকায় দাখিল মাদরাসা সংখ্যা ৩৫৮টি, আলিম মাদরাসার সংখ্যা ১২৮টি, ফাযিল মাদরাসা ৪২টি ও কামিল মাদরাসা ২৯টি, কৃষি ৬২টি, ভোকেশনাল স্বতন্ত্র ৪৮টি, ভোকেশনাল সংযুক্ত ১২৯টি, বিএম স্বতন্ত্র ১৭৫টি ও বিএম সংযুক্ত ১০৮টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
জানা যায়, এর আগে নতুন এমপিওভুক্তির জন্য গত বছরের আগস্টে আবেদন করে নয় হাজার ৬১৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে দুই হাজার ৭৩০টি প্রতিষ্ঠানকে ২৩ অক্টোবর এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়। তালিকা প্রকাশের পর বিভিন্ন রকমের প্রতিক্রিয়া দেখা যায় বঞ্চিত ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে।
নীতিমালা অনুযায়ী চার শর্ত পূরণকারী প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেয়া হয়েছে। শর্তগুলো হলো- প্রতিষ্ঠানের বয়স বা স্বীকৃতির মেয়াদ, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাসের হার। প্রতিটি পয়েন্টে ২৫ করে নম্বর থাকে। কাম্য শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং স্বীকৃতির বয়স পূরণ করলে শতভাগ নম্বর দেয়া হয়। সর্বনিম্ন ৭০ নম্বর পাওয়া প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির জন্য বিবেচিত হয়।
গত ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত এমপিওভুক্তির তালিকায় প্রায় অস্তিত্বহীন, যুদ্ধাপরাধের আসামি প্রতিষ্ঠিত, সরকারিকৃত এবং আংশিক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।