ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় এ বছর ২ হাজার ১৫৩ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৯৬০ জন পাস করেছেন। ফেল করেছেন ১৯৩ জন। অকৃতকার্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ১৭৫ জন মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে গ্রামের স্কুলগুলোর পাশাপাশি শহরের সরকারি স্কুলসহ অধিক পরিচিত স্কুলগুলোর ছাত্রছাত্রীও রয়েছেন।
উপজেলার এসএসসির ফলাফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার এ ফল প্রকাশ করা হয়।
স্থানীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, শিক্ষার্থীদের অমনোযোগিতা, একাডেমিক দুর্বলতা, পরিবারের অসচেতনতা ও মাদকের কুফলে এমনটি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে পৌরশহরের দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৩০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জন ফেল করেছেন। এদের মধ্যে ২০ জনই মানবিকের শিক্ষার্থী। রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৭৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ জন ফেল করেছেন। এদের সবাই মানবিকের। নাছরীন নবী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৩০ জনের মধ্যে ২০ জন ফেল করেছেন। এরাও মানবিক বিভাগের। দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছেন ২৩ জন। এদের সবাই মানবিক বিভাগের। মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৭৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছেন ১৭ জন। এদের মধ্যে মানবিকের শিক্ষার্থী ১৬ জন। কর্মমঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯৫ জনের মধ্যে ফেল করেছেন ১০। এদের মধ্যে ৭ জন মানবিকের। কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০৫ জন পরীক্ষা দিয়ে ফেল করেছেন ২৭ জন। এদের মধ্যে ২২ জন মানবিক বিভাগের। বাকি স্কুলগুলোর ফলাফলও একই রকম। মানবিকের শিক্ষার্থীরাই ফেল করেছেন বেশি।
জানতে চাইলে হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়্যাল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সাধারণ দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েরা মানবিক বিভাগে পড়ে বেশি। তারা পড়ালেখায় অমনোযোগী, নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে না। অনেকে দারিদ্যে কষাঘাতে কর্মসংস্থানে চলে যায়। আবার অভিভাবকদের অসচেতনার কারণে পারিবারিক গাইডেন্স পান না। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান করান। আমরাও চেষ্টা করি সবাই যাতে ভালো ফলাফল করে।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শওকত আকবর খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্বাভাবিকভাবে মানবিকের ছাত্রছাত্রীদেরকে আমরা একাডেমিকভাবে দুর্বল মনে করি। পড়াশোনার প্রতি তারা কম মনোযোগী হয়। আবার করোনার কারণে গত ২ বছর ক্লাস কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে ছিলো। এই এলাকায় মাদকের প্রবণতাও রয়েছে। অনেক ছোট ছোট ছেলেরাও ওই গ্রুপের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে এ রকম ফল এসেছে। তবে আগামীতে এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিটি স্কুলে কার্যক্রম শুরু করবো। আশাকরি এর পরিবর্তন আসবে।