এসএসসির ফরম পূরণে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় - দৈনিকশিক্ষা

এসএসসির ফরম পূরণে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায়

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি |

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার দাদপুর সাহেবগঞ্জ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। আর নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের সুযোগ দিয়ে চার থেকে ৭হাজার টাকা পর্যন্ত  হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ফি আদায়ের প্রতিবাদ করেও কোন কাজ হয়নি। বরং প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ না করার হুমকি দেয়া হয়েছে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এমনটাই অভিযোগ করেছে পরীক্ষার্থীরা। 

জানা গেছে, এ বছর বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার জন্য ১০৯ জন শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে সব বিষয়ে কৃতকার্য হয় বিজ্ঞান বিভাগে ২১জন ও মানবিক বিভাগে একজনসহ ২২জন শিক্ষার্থী। এদিকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার ফি বিজ্ঞান বিভাগে ১হাজার ৯৭০ টাকা, ব্যাণিজ্য ও মানবিক বিভাগে ১ হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও তা মানছে না বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিজ্ঞান বিভাগে বোর্ড ফি হিসেবে নেয়া হচ্ছে ২ হাজার ৩৫৫টাকা। এর সাথে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কোচিং ফি আদায় করা হচ্ছে আরো এক হাজার টাকা। ব্যাণিজ্য ও মানবিক বিভাগে নেয়া হচ্ছে বোর্ড ফি বাবদ ২ হাজার ২৩৫টাকা। আর এর সাথে যোগ হচ্ছে কোচিং ফি বাবদ আরও এক হাজার টাকা। সব মিলিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে ৩ হাজার ৩৫৫টাকা,মানবিক বিভাগে ৩ হাজার ২৩৫টাকা নেয়া হচ্ছে।

যেসব শিক্ষার্থী এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে তাদের জন্য ৪হাজার টাকা, দুই বিষয়ে অকৃতকার্যদের জন্য ৫হাজার টাকা এবং তার অধিক বিষয়ে অকৃতকার্যদের জন্য আদায় করা হচ্ছে ৬হাজার টাকা। এর সাথে অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য বাড়তি আরো ১হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। 

বিদ্যালয়ের ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম জানায়, তার দুই বিষয়ে ফেল রয়েছে। এজন্য তাকে দিতে হয়েছে পরীক্ষার ফি বাবদ ৩হাজার টাকা এবং অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য আরো এক হাজার টাকা। সাজু নামের এক শিক্ষার্থী জানায় তার তিনটি বিষয়ে ফেল রয়েছে। এজন্য তাকে ৫হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। তবে সে এখনো টাকা পরিশোধ করেনি বলে জানায়। 

মারুফ হোসেন নামের এক শিক্ষাথী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তার বেশ কয়েকটি বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। এজন্য তার ফি ধরা হয়েছে ৬হাজার টাকা। আর অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য চাওয়া হয়েছে আরও এক হাজার টাকা। বিদ্যালয়ের ফরম পূরণের নোটিশের সাথে অতিরিক্ত ক্লাস বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 
শিক্ষার্থরা আরও অভিযোগ করে বলে প্রধান শিক্ষকের পা ধরেও কোন কাজ হচ্ছে না। আর প্রতিবাদ করলে ফরম পূরণ করতে দেয়া হবেনা এমন হুমকি দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাধ্য হয়েই অনেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করেছে। এর মধ্যে নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যরাও রয়েছে।

২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ১০৯জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২জন সব বিষয়ে কৃতকার্য হয়। আর এক বিষয়ে ১৬জন,দুই বিষয়ে ৮জন এবং তিন বিষয়ে অকৃতকার্য হয় ১০জন। অবশিষ্ট আরো অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। 

বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, নির্বাচনী পরীক্ষায় ৯৮জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। তবে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছেনা বলে দাবি করেন তিনি। তবে, কোন প্রমাণ দেখাতে পারেননি। অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ম মেনেই নেয়া হচ্ছে বলে দাবি তার। 

রায়গঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন জানান, যেসমস্ত শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে তাদের ফরম পূরনের কোন সুযোগ নেই। যদি সুযোগ দিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এটা অবৈধভাবে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কোচিং ফি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই্। যদি নিয়ে থাকে সেটাও অবৈধ। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাশ দেন উক্ত কর্মকর্তা।

 এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামীমুর রহমান এর সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন
বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এখনই তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে এবং তার প্রতিবেদন পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শিক্ষা বোর্ডকে পত্রের মাধ্যমে অবহিত করা হবে।  

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038139820098877