এসএসসি ও এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় উত্তরপত্রের নম্বর গণনাতেই অসংখ্য ভুল ধরা পড়ছে বলে জানা গেছে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তা শিক্ষক অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা মনে করেন উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ থাকলে ভুলের হিসাবটি আরও দীর্ঘ হতো। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় সারা দেশে ৪ হাজার ৩১২ জন পরীক্ষার্থী নম্বর গণনায় ভুলের শিকার হয়; যা তাদের পুর্নিরীক্ষণ আবেদনের পর সংশোধন হয়েছে। গত ১৭ জুলাই এইচএসসি পরীক্ষার ফল নিয়েও আপত্তি উঠেছে। কেবল ঢাকা বোর্ডের অধীনেই এ পরীক্ষার ৫২ হাজার ৯০০ পরীক্ষার্থী উত্তরপত্র পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন। এ নিয়ে গত রোববার একটি জাতীয় দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। শনিবার (১০ আগস্ট) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।
উত্তরপত্র মূল্যায়নে ভুলভ্রান্তি কাম্য নয়। প্রতি বছরই এসএসসি এবং এইচএসসির উত্তরপত্র মূল্যায়নে ভুলভ্রান্তি হয়। কিন্তু দেখা যায়, পরবর্তী সময়ে উত্তরপত্র আর পুনর্মূল্যায়ন করা হয় না। হলেও যথার্থভাবে হয় না; শুধুমাত্র প্রাপ্ত নম্বর যোগ করার ভুল হয়েছে কিনা সেটা দেখা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকে। কারণ আসলে তারা কোন বিষয়ে কত জিপিএ পেয়েছে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকে। আবার সন্দেহ সংশয় থাকলেও সব শিক্ষার্থী শেষপর্যন্ত খাতা পুনর্নিরীক্ষণের জন্য দৌড়ঝাঁপ বা টাকা খরচ করে না। বোর্ডের নিয়মে উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের সুযোগই নেই।
মূলত দুটি কারণে উত্তরপত্র মূল্যায়নে বেশি ভুলভ্রান্তি হয়। প্রথমত, পরীক্ষক ও নিরীক্ষকদের গাফিলতি। দ্বিতীয়ত, উত্তরপত্র মূল্যায়নে যে সময় দেয়া হয় সেটা পর্যাপ্ত নয়। তাড়াহুড়োর কারণে অনেক সময় পরীক্ষকরা অন্যের সহায়তায় উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন। উত্তরপত্র গণনায় প্রচুর ভুলভ্রান্তির ফলে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তি বা অন্য ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে। উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ দেয়ার দাবিতে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুনর্মূল্যায়নের বিধান না থাকা নিয়ে রিট হলে গত ২৩ মে হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল দিয়েছেন। ওই মামলায় আইনজীবীদের একজন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, ভুল মূল্যায়নের কারণে পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনভাবেই বৈষম্যের শিকার না হয়, সেজন্য যথার্থ পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ থাকা উচিত। এজন্য বিদ্যমান আইনটি সংশোধন করা দরকার।
আমরাও তার সঙ্গে একমত পোষণ করছি। এ সমস্যা সমাধানে বিদ্যমান আইনটি দ্রুত সংশোধন করতে হবে এবং পরীক্ষার্থীরা যাতে বৈষম্যের শিকার না হয় সেজন্য পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।