এ ভুল শিক্ষকরা কী করে করেন: প্রধানমন্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

এ ভুল শিক্ষকরা কী করে করেন: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পক্ষে দাঁড়ানো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও সাবেক আমলাদের এক হাত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবনে মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “যারা আলোচনা করেন, মন্তব্য করেন, তাদের না হাই কোর্ট সম্পর্কে জ্ঞান আছে, না আপিল বিভাগের কোনো রায় সম্পর্কে ধারণা আছে।… তারা সেগুলো বেমালুম ভুলে যান।”

কোটা সংস্কার নিয়ে বিএনপি যখন কিছু বলে, তখন তা আমলে না নিলেও শিক্ষকদের ‘ভুল’ মানতে কষ্ট হয় বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, “বিএনপি যখন বলে, তখন আমি কিন্তু মনে করি না। যত বড় ব্যারিস্টার হোক, আর জ্ঞানীই হোক; তারা তো মিথ্যা কথা বলায় পারদর্শী। তারা তো বলবেই। তাদের কথায় কিছু আসে যায় না।

“আমাদের সমাজের যারা শিক্ষিত, যারা শিক্ষক; তারা এ ধরনের ভুল কী করে করেন! আমি বলেছি যে আপিল বিভাগের নির্দেশ আছে, শূন্যস্থান মেধা তালিকা থেকে পূরণ হবে…।”

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কোটাই আর তিনি রাখবেন না।

কিন্তু গত সপ্তাহে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ওই কোটা বহাল রাখতে হাই কোর্টের রায় আছে।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

কোটা ‘বাতিলে’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে ইতোমধ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটি কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা।

 কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘোষণা’ অনুযায়ী কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছে। মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যেমে কক্সবাজার জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা (জিটুপি) সরাসরি ব্যাংক হিসাবে জমা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকে আমরা হঠাৎ দেখলাম, বাংলাদেশে খুব কোটাবিরোধী আন্দোলন…।”

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সরকারি চাকরির সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি ব্যাখা করে সরকারপ্রধান বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বংশানুক্রমিকভাবে যাতে চাকরি পেতে পারে, সেই সুযোগ যাতে পেতে পারে… এভাবেই করে দিই। অন্তত রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যেন দায়িত্ব রাখতে পারে, সে ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি।

“সাথে সাথে এটাও দেখতে হবে, স্বাধীনতাবিরোধী যারা, যুদ্ধাপরাধী যারা, তারা যাতে রাষ্ট্র ক্ষমতায় না আসতে পারে, রাষ্ট্রীয় কোনো পোজিশন না পায়, সেটাও দেখতে হবে।”

কোটা নিয়ে উচ্চ আদালতের আদেশের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এ বিষয়ে রিট হওয়ার পর হাই কোর্ট হুকুম দিল, কোটা থাকবে, পদ শূন্য থাকবে। রিভিউয়ে বলল, কোটা পূরণ করে শূন্য পদ থাকলে সেটা তালিকা থেকে নেওয়া যাবে।”

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে এবং টেলিভিশন আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও সাবেক আমলাদের কেউ কেউ কোটা সংস্কারের পক্ষে কথা বলায় দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমার খুব দুঃখ হয়, আমাদের জ্ঞানীগুণী, শিক্ষিত… দেখি ইউনিভার্সিটির শিক্ষক টকশো করেন… সরকারি আমলা রিটায়ার্ড… তারাও কথা বলেন এই কোটার বিরুদ্ধে।”

 কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “তারা ওই কথা কখনো বলেন না, এই ছাত্ররা আন্দোলনের নামে ভিসির বাড়িতে আক্রমণ, লুটপাট… এর চেয়ে গর্হিত কাজ শিক্ষার্থীর জন্য আর কী হতে পারে!
“সেটা নিয়ে তারা কোনো উচ্চবাচ্য করেন না। আর দুঃখ লাগে, আপিল বিভাগের নির্দেশনার কথাও তারা যেন জানেন না।”

প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘অত্যন্ত মেধাবীরাই’ সরকারি চাকরির জন্য বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেয়।

“যারা পরীক্ষা দেয়, তারা কি মেধাবী না? তারা সকলেই মেধাবী। পিএসসি তো যথেষ্ট কঠিন। মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা ছাড়া ওই পরীক্ষা কেউ দিতে পারে না। অত্যন্ত মেধাবী হলে তারা পাস করতে পারে।”

কোটার সুযোগে কম মেধাবীরা সরকারি চাকরি পাচ্ছে বলে যারা অভিযোগ করেন, তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এমন কী মেধাবী হয়ে গেল যে যারা পরীক্ষা দিচ্ছে, পাস করছে, তারা মেধাবী না… এরা এ ধরনের কথা বলে কীভাবে?”

অন্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং সচিব অপরূপ চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0074360370635986