আজিজুল হক রশিদ ময়মনসিংহের ত্রিশালের আলহেরা একাডেমির প্রধান শিক্ষক। করোনা পরিস্থিতিতে অভাবের তাড়নায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করায় পেশা বদলে এখন ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি গরুর খামারের তত্ত্বাবধায়কের কাজ করছেন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের মধ্য পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত আজমত আলীর বড় ছেলে আজিজুল হক রশিদ। ১৯৯৩ সালে এইচএসসি পাস করেন। তারপর বিএ পড়া অবস্থায় গড়ে তোলেন মডার্ন কোচিং সেন্টার। সংসারের বড় ছেলে হওয়ায় পারিবারিক চাপ সামলাতে কোচিংয়ের পাশাপাশি চাকরি পাওয়ার আশায় দরখাস্ত করতে থাকেন। বেশ কয়েকবার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভাইভা পর্যন্ত পৌঁছালেও চূড়ান্ত নিয়োগ কপালে জোটেনি রশিদের। এরপর তিনি কোচিং চালিয়ে সুনাম অর্জন করায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন আলহেরা একাডেমি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি কোনো ধরনের দান-অনুদান ছাড়াই শিক্ষার্থীদের বেতনের মাধ্যমেই পরিচালনা করতেন রশিদ।
কিন্তু করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে বেতন আদায় করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটির সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। উপার্জন হারিয়ে বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষকসহ তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। পরে উপায় না পেয়ে স্থানীয় আবুল কালামের গরুর খামারে সাত হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
আলহেরা একাডেমির প্রতিষ্ঠা প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক রশিদ বলেন, ‘ঘর ভাড়া ও শিক্ষকদের বেতন দিতে না পারায় স্কুলটি একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছি। আর এখন সংসার চালানোর জন্য একটি গরুর ফার্মে কাজ করছি।’
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন