করোনা সংক্রমণে শিক্ষার ক্ষতি হয়েছে অনেক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, নিয়মিত ক্লাসগুলো বন্ধ। অনলাইনে, টিভি-রেডিওতে কিছু ক্লাস হচ্ছে বটে, তবে তা নিয়ম রক্ষার কোশেশ মাত্র। প্রকৃত শিক্ষা কার্যক্রম বলতে যা বোঝায়, তা নেই। এটিই করোনাকালের বাস্তবতা। কিভাবে এই ক্ষতি পোষানো যায় সেটিই এখন বড় চিন্তা। সে ক্ষেত্রে করা হচ্ছে অটোপ্রমোশনের কথা। বুধবার (১২ আগস্ট) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, শিক্ষার এই ক্ষতি পোষাতে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়। তারা সময় না বাড়িয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে চলতি শিক্ষাবর্ষ শেষ করতে প্রায় একমত। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে স্কুল যদি খোলা সম্ভব হয়, তাহলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নিতে চায়। সেটি যদি সম্ভব না হয়, তাহলে অটোপ্রমোশনের ব্যবস্থা করা হবে। পরীক্ষা হোক বা অটোপ্রমোশন হোক, উভয় ক্ষেত্রে পাঠ্য বই বা সিলেবাসের যতটুকু পড়ানো সম্ভব হবে না তার অত্যাবশ্যকীয় পাঠ পরের শ্রেণিতে যুক্ত করা হবে। শিক্ষার এ উত্তরণ পরিকল্পনা (রিকভারি প্ল্যান) চূড়ান্ত করতে আজ বুধবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের একটি বৈঠক হবে।
আরেকটি ভাবনা তাদের ছিল। সেটি হলো নভেম্বরের মধ্যে স্কুল খোলা সম্ভব হলে ডিসেম্বরে সংক্ষিপ্ত পরিসরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা নেওয়া। প্রতিটি স্কুল থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মেধাবী শিক্ষার্থী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। এ পরিকল্পনায় সব বিষয়ের পরীক্ষা না নিয়ে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। সেটি বাতিলের চিন্তা চলছে। করোনার কারণে সব বিদ্যালয়ই বন্ধ। এ কারণে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে একটি প্রস্তাব যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বলেছেন, সরকারপ্রধান অনুমোদন দিলে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা এবার নেওয়া হবে না। দুই মন্ত্রণালয়ই এ বিষয়ে সারসংক্ষেপ তৈরি করছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে নাগাদ খুলবে তার ওপর নির্ভর করছে উত্তরণ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। পরিস্থিতিটা বিশেষ—এ বিবেচনায় পিইসি ও জেএসসি এবার না হলে ক্ষতি নেই। আর অটোপ্রমোশন না হয়ে যদি সংক্ষিপ্ত সাজেশনে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, তা ভেবে দেখা যেতে পারে।