বিনামূল্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসা, ছাত্রদের বেতন-ফি মওকুফ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট। রোববার (৫ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে এ সড়ক অবরোধ করেন তারা। এসময় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা।
অবরোধ চলাকালে বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদি হাসান নোবেল ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়।
নেতারা বলেন, “করোনা মহামারীতে লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, বিনা চিকিৎসায় হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু মানুষের জীবন বাঁচাতে সরকারের ন্যূনতম প্রস্তুতিও নেই। এ মুহূর্তে সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রয়োজন বেশি বেশি পরিমাণ টেস্ট করা। কিন্তু আমরা জানি ৪৩টি জেলায় কোনো পিসিআর মেশিন নেই। টেস্ট কিটের অভাব, নেই দক্ষ চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী। হাসপাতালগুলোতে নেই পর্যাপ্ত আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। অক্সিজেন সিলিন্ডার গ্যাসের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।”
নেতারা আরও বলেন, “করোনার এই পিকের সময় প্রয়োজন ছিল বেশি বেশি টেস্ট করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা। তা না করে নতুন করে করোনা পরীক্ষার জন্য ২০০ টাকা ও ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ চরম গণবিরোধী সিদ্ধান্ত।”
ছাত্র জোটের নেতারা বলেন, “প্রায় ৫ কোটি শিক্ষার্থী আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিচ্ছিন্ন। এসময় প্রয়োজন ছিল ছাত্রদের পরিবারগুলোকে খাদ্য ও নগদ অর্থ সহয়তা করা, ছাত্রদের বেতন-ফি ও মেস ভাড়া মওকুফ করা। তা না করে শিক্ষা প্রদানের নাম করে অনলাইন শিক্ষা ছাত্রদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এর মধ্য দিয়ে প্রযুক্তি ও শিক্ষা ব্যবসায়ীদের পুঁজি বিনিয়োগ ও মুনাফার পথই উন্মুক্ত হবে। এতে ধনী-গরীব বৈষম্য আরও প্রকট হবে।”
চারদিকে প্রচণ্ড অন্যায়-অত্যাচারে মানুষ ভালো নেই উল্লেখ করে জোটের নেতারা বলেন, “এর বিরুদ্ধে যেন কেউ কিছু বলতে না পারে তার জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮’- এর মতো নিবর্তনমূলক আইন। এই কালো আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে লেখক-শিক্ষক-রাজনৈতিক আন্দোলনের কর্মী-সাংবাদিকসহ আরও অনেককে। এই আইন জনগণকে অনিরাপত্তায় রেখে আওয়ামী দুঃশাসনকেই নিরাপদ রাখার চক্রান্ত।”
এসময় আগামী ৯ জুলাই মেসভাড়া মওকুফের দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ, ১২ জুলাই দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গণ অবস্থান ও ১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে ‘কফিন মিছিল’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতারা।