করোনা ভাইরাস : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছুদিন বন্ধ রাখাই শ্রেয় - দৈনিকশিক্ষা

করোনা ভাইরাস : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছুদিন বন্ধ রাখাই শ্রেয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

কভিড-১৯ এখন করোনাভাইরাস নামে পরিচিত। প্রথমে চীনের জনগণ এই ভাইরাসের মাধ্যমে আক্রান্ত হলেও বর্তমানে বিশ্বের ১২০টির মতো দেশের জনগণ এই ভাইরাসের মাধ্যমে আক্রান্ত। সম্প্রতি বাংলাদেশেও কয়েকজন রোগী পাওয়া গেছে, যারা এই ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছে এবং অনেকেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা এখন পর্যন্ত বেশ ভালো। তাই সরকারের উচিত, এখনই এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যা এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে সাহায্য করে। যেহেতু এই রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই, তাই একমাত্র এর বিস্তার রোধই পারে এটাকে কিছুটা প্রতিহত করতে। সোমবার (১৬ মার্চ) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। 

নিবন্ধে আরও জানা যায়,  এই ভাইরাসের বিস্তার রোধ এবং নিজেকে নিরাপদ রাখতে যে পরামর্শগুলো এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো- জনসমাগম রয়েছে এমন স্থান পরিহার করা, গণপরিবহন এড়িয়ে চলা ও নিজের হাত বারবার পরিস্কার রাখার মাধ্যমে নিজেকে পরিস্কার রাখা। একবার চিন্তা করে দেখুন, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় চালু থাকলে এই পরামর্শগুলো মেনে চলা সম্ভব কিনা। বিশ্বের উন্নত প্রায় সব দেশেই যেসব অঞ্চলে এই ভাইরাসের বিস্তারের সম্ভাবনা রয়েছে তারা ইতোমধ্যে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে। আমি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। এখানে গত ৪ সপ্তাহ এই দেশের ৭৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেতন ও পেনশন বৃদ্ধির জন্য ধর্মঘট পালন করায় গত ৪ সপ্তাহ এখানে তেমন কোনো ক্লাস হয়নি। আমেরিকা অনেক আগেই বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে, যাতে জনসমাগম কম হয়।

কিন্তু আমাদের দেশের সরকার ও মন্ত্রীরা আপাতত তাতে নারাজ। তাদের দাবি, বাংলাদেশ এখনও অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশ ভালো অবস্থানে আছে। কথাটা সত্য এবং আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। ভালো অবস্থানে আছে বলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা প্রয়োজন। কেননা, এর মাধ্যমে জনসমাগম কমবে এবং এই ভাইরাসের বিস্তার কিছুটা হলেও রোধ হবে। একবার ভেবে দেখুন, আমাদের সন্তানরা কীভাবে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করছে। প্রায় সবাই গণপরিবহন ব্যবহার করছে। আর আমাদের দেশের গণপরিবহন, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াশরুমের কথা না হয় না-ই বলি। ঢাকা শহরজুড়ে মানুষ গিজগিজ করছে, ধাক্কাধাক্কি না করে গণপরিবহনে যেমন উঠতে পারবেন না, তেমনি ফুটপাত দিয়ে হাঁটতেও পারবেন না। এ পরিস্থিতি যদি এই মানুষগুলোর মাঝে একজনও আক্রান্ত থাকে, সেটি সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময় লাগবে না।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে সবার আগে এগিয়ে আসতে পারে। কেননা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করতে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন মনে করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখতে পারে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব, বিশ্ববিদ্যালয় কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখুন এবং শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে চলে যেতে অনুরোধ করুন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হলের অবস্থা ভয়াবহ। গণরুমে ২০ থেকে ৩০ জন একসঙ্গে বসবাস করে, সিঙ্গেল রুমে ৩ থেকে ৫ জন একসঙ্গে বসবাস করে, ডাবল রুমে ৮ থেকে ১০ জন একসঙ্গে বসাবস করে। একটি টয়লেট কমপক্ষে ৩০ জন শিক্ষার্থী ব্যবহার করে। একটি প্লেটে কমপক্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী খাবার খায়। এ পরিস্থিতিতে কোনো সচেতনতাই কাজ আসবে না এবং একজন আক্রান্ত হলে মুহূর্তেই তা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়বে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে অন্যদের পথ দেখাক।


লেখক:  আসাদুজ্জামান কাজল, প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033071041107178