সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলো নিয়ে সমস্যা বেশ পুরোনো। আগে অনেক কলেজে পরীক্ষায় নকল হতো। ছাত্রভর্তি ও শিক্ষক নিয়োগে অনেক ঝামেলা ছিল। শিক্ষার মান নিয়ে তো সমস্যা ছিলই। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই তদানীন্তন জগন্নাথ কলেজসহ সব কলেজের নিয়ন্ত্রণ ছিল। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ওই সব অঞ্চলের কলেজগুলোর দায়িত্ব তাদের দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২ জুন) আজকের পত্রিকা পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, তখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার পক্ষে যুক্তি ছিল শিক্ষাক্রম তৈরি ও সংস্কার, শিক্ষক নিয়োগ এবং পরীক্ষা ব্যবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় মানের তদারকি বজায় থাকলে মান ভালো থাকবে। কিন্তু অনেক সমস্যা থাকায় কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এ দায়িত্ব পালন করতে চাইতো না। অবশ্য ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ ও ফেনী কলেজসহ শত বছরের পুরোনো কিছু কলেজ চেষ্টা করত মান কিছুটা ধরে রাখতে।
পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভারমুক্ত হলো। কিন্তু সাতটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েই গেল। কিন্তু কলেজ প্রশাসন, শিক্ষাক্রম ও পাঠদান পদ্ধতিতে তেমন কোনো উন্নতি না হওয়ায় এ চেষ্টা সফল হলো না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভারমুক্ত হলো বটে, কিন্তু সমস্যা আর মিটল না।
আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলাম, তখন থেকেই প্রধানমন্ত্রী [শেখ হাসিনা] বলছিলেন কলেজগুলো নিয়ে কিছু করা যায় কিনা। কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাড়তি দায়িত্ব নিতে বেজায় অনিচ্ছুক ছিল।
এখন আবার সরকারি কলেজগুলোকে বিকেন্দ্রীকরণ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এ পরিবর্তন ভালো উদ্দেশ্যেই করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমান কাঠামোতে অধিভুক্ত কলেজগুলো নিয়ন্ত্রণের অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নেই। আবার সারা দেশে এতগুলো কলেজকে তত্ত্বাবধানের সামর্থ্যও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোর প্রশাসনিক কাঠামো যদি আগের মতোই থাকে, তাহলে এ পরিবর্তন থেকে সুফল পাওয়া কষ্ট হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, অনেক দিন ধরে। ব্যাধি অনেক পুরোনো। আমি জানি না, শেষ পর্যন্ত কী ফল হবে।