অবরুদ্ধ ভারতীয় কাশ্মীরে প্রশাসনের নির্দেশে সব স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্কুল খুললেও সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের উপস্থিতিও অনেকটাই কম।
শ্রীনগরের জম্মু কাশ্মীর পাবলিক স্কুলের দায়িত্বে থাকা উমর ফারুককে এক অভিভাবক প্রশ্ন করেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো হোমওয়ার্ক দেওয়া হয়েছে কি? এর জবাবে উমর ফারুক বলেন, একটু সময় দিন আমাদের। সমস্ত শিক্ষককে স্কুল খোলার খবর দিয়ে উঠতে পারিনি আমরা।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার আগে পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক ছিল, শ্রীনগরের এই হুমহামা অঞ্চলের স্কুলটি ছাত্র-ছাত্রীদের পদচারণায় একেবারে গমগম করত। কিন্তু বিগত একমাস ধরে স্কুলে তালা পড়ে ছিল। শুধু জম্মু কাশ্মীর পাবলিক স্কুলই নয়, উপত্যকার ৬ হাজার স্কুলের প্রত্যেকটারই কম বেশি একই হাল।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার সময় স্কুলের ২০০০ ছাত্র, ২০০ জন কর্মী, কেউই আসেনি স্কুল চত্বরে। ৮০ টি ক্লাসরুমই বন্ধ। স্কুলের বাসগুলো সারি সারি পার্ক করা রয়েছে স্কুল মাঠে।
প্রশাসনের কড়া নির্দেশ জারি রয়েছে, উপত্যকার সব স্কুল খোলা রাখতে হবে। প্রাইমারি স্কুল খোলা রাখার কথা ঘোষণা দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
উমর ফারুক জানান, কয়েকজন মাত্র শিক্ষক এসেছিলেন। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা একজনও আসেনি।
এর পর একে একে হাই স্কুলগুলো খোলার নির্দেশ জারি করেছে প্রশাসন। কিন্তু উপত্যকার অবস্থা পাল্টায়নি। ছাত্রছাত্রীরা এখনও আসছে না স্কুলে। বিগত এক সপ্তাহ ধরে বেশ কিছু অভিভাবক অবশ্য এসে খোঁজ নিচ্ছেন নিয়মিত।
মাধ্যমিক স্কুলের সুপারভাইজার বশির আহমেদ জানিয়েছেন, রাস্তায় এখনও পর্যাপ্ত যান চলাচল শুরু হয়নি। তাঁকে আসতে হয় নিজের সাইকেলে চড়ে।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে ২০১৬ সালের কথা। হিজবুল মুজাহিদ্দিন প্রধান বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন অচল ছিল উপত্যকা।
উপত্যকাবাসীদের অনেকেই বলছেন, তখন অন্তত শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছাত্রদের বাড়িতেই কিছু কাজ দেওয়া যেতো। এখন তো এটাও আমরা জানতে পারছি না, তারা কী অবস্থায় রয়েছেন।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস