কিশোর গ্যাং : পান্থপথে চলে চাঁদাবাজি ছিনতাই - দৈনিকশিক্ষা

কিশোর গ্যাং : পান্থপথে চলে চাঁদাবাজি ছিনতাই

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

উঠতি বয়সী একদল কিশোর শাহজাহান নামে এক যুবককে ধরে মারধর করছিল। আশপাশে লোকজনের ভিড়। একজন মারধরের কারণ জানতে চাইলে তেড়ে আসে এক কিশোর—‘আপনি কে, কথা না বাড়িয়ে কেটে পড়েন। পরে ঝামেলা হবে।’ এরপর পুলিশে খবর দিলে তারা এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে। শনিবার (১৯ অক্টোবর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন রেজোয়ান বিশ্বাস।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ঘটনাটি ঘটেছে গত ৯ অক্টোবর। এরপর ১২ অক্টোবর রাতে পান্থপথ সিগন্যালে ছিনতাইয়ের শিকার হন উত্তম নামের একজন। সাম্প্রতিক এ দুটি ঘটনার মাসখানেক আগে জামাল উদ্দিন নামের এক যুবকের ফুটপাতের পিঠার দোকান গুঁড়িয়ে দেয় একদল কিশোর। তাঁর ‘অপরাধ’ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানো।

সরেজমিন পান্থপথ এলাকা ঘুরে কিশোর গ্যাংয়ের নানা অপরাধের তথ্য পাওয়া গেছে। সন্ধ্যা হলেই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে তারা। রাত গভীর হলে ছিনতাইয়ে নামে। ফুটপাতে চাঁদাবাজি তো আছেই। রাতে পুলিশের টহল থাকলেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যত কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয় না। ভয়ে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতেও ভয় পায় ভুক্তভোগীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্তত ২০ জনের একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে এ এলাকায়। তারা মাদক কারবার, ছিনতাই, ফুটপাতে চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে এ কিশোর অপরাধীদের কাছে এলাকার ফুটপাতের দোকানদারসহ সাধারণ মানুষ একপ্রকার জিম্মি হয়ে আছে। তারা এলাকার ফুটপাতের শতাধিক দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা নিয়ে থাকে। তাদের চাঁদা না দিয়ে কারো পক্ষেই ফুটপাতে দোকানদারি করা সম্ভব নয়।

স্থানীয় অনেকেই নাম প্রকাশ না করে কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, এলাকার কিশোর অপরাধীদের নেতৃত্ব দিচ্ছে সজীব, মিন্টু খান ও আলমগীর। তারা দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্রও বহন করে। তাদের অবৈধ শক্তির উৎস স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা।

পিঠা দোকানদার জামাল উদ্দিন দাবি করেন, স্থানীয় কিশোর অপরাধীরা তাঁর কাছে সপ্তাহে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। তিনি চাঁদা দিতে না চাইলে তারা লাথি দিয়ে তার পিঠা তৈরির হাঁড়ি-পাতিল ফেলে দেয়। এ সময় গরম পানিতে একজনের পা ঝলসে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো তারা জামালকে মারধর করে। তাঁর দুই বোন প্রতিবাদ করলে তাদেরও মারধর করা হয়।

জামাল দাবি করেন, মাসখানেক আগের ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা দূরে থাক, সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) নেয়নি। পুলিশের এক সদস্য থানার ভেতরই তাঁকে বলেন, ‘ওরা (কিশোর অপরাধী) স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সহযোগী। ওদের বিরুদ্ধে মামলা করে কোনো লাভ নেই।’

এরপর জামাল উদ্দিন পুলিশ সদর দপ্তরে ‘আইজিপি’স কমপ্লেইন্টস মনিটরিং সেলে’ অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান। সেই সঙ্গে তিনি আদালতেও মামলা করেছেন।

কলাবাগান থানার ওসি ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ফুটপাতের সব দোকানই অবৈধ। যে স্থানে জামাল পিঠার দোকান করেছিল বলা হচ্ছে, সেখানেও দোকান বসানো অবৈধ। ওই ঘটনার পর ফুটপাতের সব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।

চাঁদাবাজি নিয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, স্থানীয় ছেলেদের সঙ্গে জামাল উদ্দিনের দ্বন্দ্ব আগে থেকেই। ওই ছেলেরা দোকানে গেলে জামালের সঙ্গে তাদের ঝগড়া হয়। এক ছেলের গায়ে গরম পানি ঢেলে দেয় জামাল। এতে গুরুতর আহত ওই ছেলে। পরে তারা থানায় মামলা করে। তবে জামাল মামলা করতে থানায় আসেননি।

নাম প্রকাশে এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে মানসম্মান নিয়ে চলাফেরা করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। স্কুলে যাওয়ার পথেও এরা মেয়েদের নানা আজেবাজে কথা বলে। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন কি না জানতে চাইলে ওই অভিভাবক বলেন, ‘পুলিশকে বলে কী লাভ, তারাই তো অপরাধীদের পালে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের উপকমিশনার মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘কঠোরভাবে কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কেউ কিশোর গ্যাংয়ের হাতে নাজেহাল হলে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042500495910645