কুবিতে উচ্চ মাধ্যমিক পাসেই হওয়া যায় কর্মকর্তা - দৈনিকশিক্ষা

কুবিতে উচ্চ মাধ্যমিক পাসেই হওয়া যায় কর্মকর্তা

কুবি প্রতিনিধি |

উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কর্মচারী হিসেবে যোগ দিয়ে পদোন্নতি পেয়ে কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই সুযোগ ব্যবহার করে এরই মধ্যে কর্মকর্তা হয়েছেন দুই ডজনেরও বেশি কর্মচারী। এমনকি ওই নীতিমালায় কর্মচারী থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার হওয়ার সুযোগও রয়েছে।

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চাকরি বিধিমালায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে আবেদনের জন্য নূ্যনতম স্নাতক বা স্নাতকোত্তর যোগ্যতা থাকতে হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানে অস্বাভাবিক এক নীতিমালার মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা কর্মচারী থেকে কর্মকর্তা হচ্ছেন অনেকে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির পদে চাকরিতে ঢোকেন তারা। চাকরি চলাকালীন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট জমা দিয়েই কর্মকর্তা হচ্ছেন অনেকে। একই পদ্ধতিতে মাধ্যমিক পাস করে চতুর্থ শ্রেণিতে চাকরি নেওয়া কর্মচারীরাও হতে পারবেন কর্মকর্তা। যেখানে সর্বমোট তিনটি পদোন্নতি নিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে তাদের চাকরিজীবন শেষ করার কথা, সেখানে ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট দেখিয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার পর্যন্ত হতে পারবেন এই কর্মচারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আলী আশরাফ ৫২তম সিন্ডিকেট সভায় নীতিমালা সংশোধন করে এ বিধিমালা তৈরি করেন। বর্তমান উপাচার্য অস্বাভাবিক এমন বিধিমালা পরিবর্তন না করে উল্টো প্রথম শ্রেণির সেকশন অফিসার পদে আবেদনকারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১তম সিন্ডিকেট সভায় সেকশন অফিসার পদে আবেদন করা ১২ জনকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে সময় প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পাওয়া এক কর্মকর্তা বলেন, 'আমাদের হাইকোর্টে রিট করার কথা ছিল। কিন্তু করা হয়নি। এখন ভাবছি আমাদের অধিকার আদায় করতে হলে তা করতে হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কর্মচারী থেকে পদোন্নতি পেয়ে কর্মকর্তা হওয়া অধিকাংশেরই শিক্ষাজীবনের ফলাফল নিম্নমানের। অন্যদিকে তাদের পদের বিপরীতে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে আবেদন করেও চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন যোগ্য প্রার্থীরা।

এমন অস্বাভাবিক নীতিমালার প্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ গুণগত মান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। এমন সুযোগ থাকায় ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট আনার হিড়িকও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে। এ ছাড়া কর্মচারী থেকে কর্মকর্তা হওয়া ব্যক্তিদের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন তাদের চেয়ে নিম্নপদে থাকা অধিকতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্নরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ওপরের পদে হলেও অনেক সময় তাদের কাজ আমাদের করে দিতে হয়। কারণ তারা অনেক কিছুই বোঝেন না। এটা খুবই বিব্রতকর। এ নিয়ে কর্মকর্তা পরিষদের নেতাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ থাকলেও নির্বাচনে ভোট হারানোর ভয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে নারাজ তারা।

কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি জিনাত আমান বলেন, বিধিমালায় অনার্স ও ডিগ্রির একটা পার্থক্য রাখা দরকার ছিল, যেটা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও আমরা এই পদ্ধতি বন্ধ করতে পারিনি।

এমন অস্বাভাবিক নীতিমালার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী বলেন, 'এই নীতিমালা আমার সময় করা হয়নি। আমরা এটা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পাঠাব। প্রয়োজন হলে সিন্ডিকেটে তুলে সঠিক ব্যবস্থা নেব।'

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065581798553467