অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। খোকার মরদেহ আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে পৌঁছাবে। পরে তাকে ঢাকার জুরাইনে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে। খোকার পারিবারিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাদেক হোসেন খোকার শ্যালক শফিউল আজম খান জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃতদেহ ঢাকায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার ইচ্ছা অনুযায়ী জুরাইন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
তিনি বলেন, দুই বছর আগে সাদেক হোসেন খোকার বাংলাদেশ পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ দূতাবাসে তিনি মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেও জবাব পাননি। এখন তার মৃতদেহ ঢাকায় নেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট প্রয়োজন। পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসে ট্রাভেল ডকুমেন্টের জন্য ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেছা জানান, সাদেক হোসেন খোকার মরদেহের সঙ্গে তার স্ত্রীকে ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট দেয়া হবে। এ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।
দীর্ঘদিন নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টার দিকে সেখানকার একটি হাসপাতালে মারা যান খোকা। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। খোকা ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ১২ মে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তার দল সরকার গঠন করলে তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। পরে ১৯৯৬ এবং ২০০১ খ্রিষ্টাব্দেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার দল সরকার গঠন করলে তিনি মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন।
এরপর তিনি সরাসরি নির্বাচনে জয় লাভের মাধ্যমে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। খোকা ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করেন।
কিডনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কে যান সাদেক হোসেন খোকা। এরপর থেকে গত সাড়ে পাঁচ বছর ধরে থাকছিলেন নিউইয়র্ক সিটির ইস্ট এলমহার্স্ট এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ইসমত হোসেন।
