চবিতে তিন্নির ভর্তি নিয়ে শঙ্কা - দৈনিকশিক্ষা

চবিতে তিন্নির ভর্তি নিয়ে শঙ্কা

চবি প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে বাবা হারানো তিন্নি দাসের ভর্তি নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সংশ্লিষ্টরা বিশেষ ব্যবস্থায় ভর্তিতে সম্মতি দিলেও উচ্চপর্যায়ে রয়েছে সিদ্ধান্তহীনতা। তিন্নির ভর্তি নিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোর দাবি উঠলেও নিয়মকানুনের ভিন্ন সুর তুলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে ব্যবসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব বলেন, ‘সি’ ইউনিটে মে‌য়ে‌ তিন্নিকে পরীক্ষা দেয়ার জন্য নি‌য়ে এসে ফেরার প‌থে হৃদ‌রো‌গ আক্রান্ত হ‌য়ে মারা যান মৃণাল দা‌স। তিন্নি পরীক্ষায় পাস ক‌রে‌ছেন কিনা সে ‌বিষয়ে আমার জানা নেই। আর তা‌কে বি‌বিএ অনুষ‌দে ভ‌র্তির বিষ‌য়ে অনুষ‌দের ডিনের প‌ক্ষে অফিশিয়াল কোনো আলোচনা, আবেদন বা সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়া এ বিষয়ে ভ‌র্তি ক‌মি‌টির কা‌ছেও কোনো আবেদন করা হয়‌নি।

বিষয়টি নিয়ে মন খারাপ তিন্নির পরিবারেও। বাবা হারানো শোকাহত বোনের বিষয়টি মানবিকভাবে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আহ্বান জানান বড় ভাই সানি দাস। তিনি বলেন, ‘বাবাকে হারিয়ে আমরা বাক্‌রুদ্ধ। তিন্নিও কারও সঙ্গে কোনো কথা বলছে না।’ 

তিনি আরও বলেন, চবি কর্তৃপক্ষ তিন্নিকে ভর্তি করছে- স্যোশাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে এমন খবর দেখে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। স্বভাবতই মন খারাপ হচ্ছে।

এর আগে মানবিক বিবেচনায় তিন্নির পাশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়াবে বলে জানিয়েছিলেন ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। এই সিদ্ধান্তে প্রাথমিকভাবে ডিনের সম্মতিও রয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। শুক্রবার ড. শামীম জানান, ‘মেয়েটার হয়তো চান্স হয়নি। তবে আমরা মানবিক বিবেচনা করছি। আমরা তিন্নিকে শর্তহীনভাবে ভর্তি করানোর চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, তিন্নি দাসের সিদ্ধান্তটা আমার একার নয়। ভর্তি পরীক্ষার কমিটি আছে, সর্বোচ্চ পর্ষদ থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, সেটাই চূড়ান্ত হবে। আমরা শুধু চাচ্ছি— বাবা হারা মেয়েটার যে স্বপ্ন ছিল; তাতে যদি আমাদের কোনো সহযোগিতা করার সুযোগ থাকে, সেটা করতে।
 
যদি তিন্নিকে ভর্তি করা হয় তাহলে মেরিট লিস্টের কেউ বাদ যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তবে অনেকে হয়তো মনে করছে মেরিট লিষ্টে থাকা কোনো শিক্ষার্থীকে বাদ দিয়ে তিন্নিকে ভর্তি করানোর কথা বলছি আমরা। অথচ এমনকিছুই ঘটবে না। বরং আমরা চেষ্টা করছে অনেক কোটার কিছু আসন খালি থাকে। সেগুলোর একটিতে যদি তিন্নিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখা যায়, তাহলে সেটার জন্য আবেদন জানাতে রোববার আমরা একটা মিটিং করবো।

অনুষদের ডিন বিষয়টা জানেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টা এখনো অনিশ্চিত হওয়ায় ডিন হয়তো এই বিষয়ে আপাতত কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছে না। তবে এটা নিয়ে খুব বেশি হইচই না করে, আমার মনে হয় আমাদেরকে ধীরে-সুস্থে কাজ করতে দেয়া উচিৎ।

এদিকে তিন্নিকে ভর্তি করার ব্যাপারে প্রাথমিক খবরে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। এমনই একজন আবদুস সোবাহান বলেন, তিন্নির বাবার বড় আশা ছিল মেয়েটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবে। এই আশা বাস্তবায়ন করতে মেয়েকে উৎসাহ দিতে নিজেই ভর্তি পরীক্ষার সময় ক্যাম্পাসে চলে আসেন। কিন্তু আর ফেরা হলো না তার। এদিকে বাবা হারানোর শোক কাটিয়ে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাও ভালোভাবে দিতে পারবে না তিন্নি। তাই বিশেষ প্রক্রিয়ায় তাকে ভর্তি করানো হলে মানবতার জয় হবে।

তথ্যমতে, গত বুধবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ইতোমধ্যে প্রকাশিত ফলাফলে তিন্নির চান্স না হওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে তিন্নিকে বিশেষ ব্যবস্থায় ভর্তির দাবি জানায়।

মৃণাল দাশের বাড়ি সাতকানিয়ার আমিলাইশ গ্রামে। তবে পরিবার নিয়ে তিনি নগরের এনায়েতবাজারের গোয়ালপাড়া এলাকায় বাস করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া সাতকানিয়ার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘সাতকানিয়া–লোহাগাড়া স্টুডেন্ট ফোরামে’–এর সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, পরিবারের তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিন্নি। তাই তাঁকে নিয়ে বেশি স্বপ্ন দেখছিলেন বাবা মৃণাল দাশ। এ জন্য মেয়েকে উৎসাহিত করতে নিজেও ক্যাম্পাসে আসেন। মেয়ে হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। কিন্তু বাবার সেটা আর দেখা হলো না। এমন ঘটনা মানতে পারছি না। আকস্মিক বাবাকে হারিয়ে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিন্নি।’

ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061800479888916