জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই প্রধান শিক্ষকের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। এতে আহত হয়েছেন প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক। তিনি এখন উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন আহত শিক্ষক।
ওই দুই শিক্ষকের একজন হলেন উপজেলার সোনাহাট দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আলমগীর হোসেন, অপরজন হলেন সোনাহাট বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আলফাজ আলম।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট বাজার মসজিদের সামনে এমন ঘটনা ঘটে। দুই প্রধান শিক্ষকের এমন কাণ্ডে হতবাক হয়ে পড়েছে উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের শিক্ষক ও সচেতন মহলসহ এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় জানা যায়, দুই শিক্ষকের একই সীমানায় জমির গাছ এবং বাঁশ নিয়ে মঙ্গলাবার দুপুরে ভূরুঙ্গামারী টু সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের পাশে সোনাহাট বাজার জামে মসজিদের দক্ষিন পাশে ফলের দোকানের সামনে দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায় সোনাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন সোনাহাট সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলফাজ আলমের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেনের আঘাতে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক আলফাজ আলমের চোখের নীচে কেটে যায় এবং রক্ত ঝরতে শুরু করে। এসময় বলদিয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোজদার হোসেন উপস্থিত হয়ে তাদের নিবৃত করেন এবং আলফাজ আলমকে সরিয়ে নিয়ে যান।
পরে আলফাজ আলমকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করোনো হয় এবং সন্ধ্যায় প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেনকে অভিযুক্ত করে তিনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আলফাজ আলম বলেন, সোনাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেনের বাড়ির পাশে দুই বিঘা জমি রয়েছে তার। বেশ কিছুদি আগে ওই জমিতে লাগানো কয়েকটি গাছ কেটে নেন আলমগীর হোসেন। এর পরে গত রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ওই জমিতে থাকা বাঁশঝাড় থেকে একশ'র বেশি বাঁশ কেটে খারাপ গুলো আমার সীমানায় রেখে ভাল বাঁশগুলো তিনি নিয়ে যান। আমার জমির বাঁশ আমাকে না জানিয়ে কেটে নেওয়ার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে আমার উপর চড়াও হন। একপর্যায় প্রকাশ্যে আমাকে চড়- থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। আমি নিজেকে বাঁচাতে তা প্রতিরোধ করতে থাকি। এতে আমার চোখের নিচে ফেঁটে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে চিকিৎসার জন্য ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালে ভর্তি হই এবং থানায় তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করি।
এ বিষয়ে সোনাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি যোহরের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় আমাকে আলফাজ থামতে বলেন। আমাকে থামিয়ে আমার সাথে খারাপ আচরণ করলে আমি তাকে থাপ্পড় মারি। তবে আলফাজের জমিতে থাকা বাঁশ কাটার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারন ডায়েরি হয়েছে।