জাতীয়করণের এক দফা দাবির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না পেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষকরা। শুধু তাই নয়, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচির চিন্তাও করছেন তারা। বৃহস্পতিবার (১৮ই জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৪র্থ দিনের মতো আমরণ অনশন করেন শিক্ষকরা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষকরা দাবি আদায়ে এমন কঠিন কর্মসূচির কথা জানান।
বৃহস্পতিবার (১৮ই জানুয়ারি) বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের নেতা নজরুল ইসলাম রনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘আগামী রোববারের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয়করণের সরাসরি ঘোষণা না আসলে আমরা সামনে এসএসসি পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেবো। পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরীক্ষার কোন কাজের সাথে আমরা থাকব না। জাতীয়করণে দাবি নিয়ে দুএক দিনের মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল। গতকাল (বুধবার) প্রধানমন্ত্রী যেহেতু সংসদে আমাদের দাবির বিষয়ে ইতিবাচক কথা বলেছেন। তাই পূর্বাপর ভেবেই আমরা সরকারকে সময় দিচ্ছি। আর দু’এক দিন অপেক্ষা করব। তারপর এসএসসি পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেবো।
বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত ১০ জানুয়ারি থেকে আন্দোলনে নামেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ১৫ জানুয়ারি থেকে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার পাশে পাটি বিছিয়ে গায়ে কম্বল জড়িয়ে শুয়ে বসে আমরণ অনশন পালন করে যাচ্ছেন তারা। এসব শিক্ষকদের ছয়টি সংগঠন জোট ‘বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরাম’ এর ব্যানারে এ আন্দোলনের পরিচালিত হচ্ছে। তবে, অনশনে অংশ নেয়া সবাই শিক্ষক নন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্কুলের নাম বলতে পারেননি অথচ মাথায় অনশনের ব্যান্ড বেঁধে প্রেসক্লাবের সামনে বসেছিলেন অনেকেই।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্যদূরীকরণে এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকরা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। সারা দেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তারা বলেন, দেশের ৯৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারিভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তারা সেসব প্রতিষ্ঠান চালালেও নামে মাত্র বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। তা দিয়েই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। অথচ ৩ শতাংশ সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উচ্চমানের বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। এ কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করতে হবে। এ দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি।
লিয়াঁজো ফোরামের আহ্বায়ক মো. আব্দুল খালেক বলেন, জাতীয়করণ ছাড়া আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। দাবি পূরণে আমরা সোমবার সকাল পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম। এ সময়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস না আসায় সোমবার থেকে দেশের দেশের ২৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা আমরণ অনশনে নামছেন।
অপর এক নেতা আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, ‘এক দফা এক দাবী জাতীয়করণ, জাতীয়করণ।’