সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর, জাতীয় পতাকা অবমাননা, বোমা হামলা ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ মামলার আসামী আছাদুজ্জামান মোহনকে ফের আখড়াখোলা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে স্ব পদে বহাল করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ও ছফুরননেছা কলেজের সহকারি গ্রন্থগার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই ব্যাক্তি দুই জায়গায় চাকুরি করে সরকারি অর্থ ভোগ দখল করে আসছেন।
দেবনগর গ্রামের ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য হুমায়ুন কবির বাবলু জানান, আখড়াখোলা আইডিয়াল কলেজটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজে প্রথম থেকে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন দুনীতিবাজ অধ্যক্ষ আছাদুজ্জামান মোহন। অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করার পর তিনি নানা রকম অনিয়মনে জড়িয়ে পড়েন। কলেজের টাকায় জমি কিনে তিনি নিজের নামে রেষ্ট্রি করে নেন। কলেজের ১০০ শতক জমি কিনে তিনি সাড়ে ১৬ শতক জমি নিজের নামে রেজিষ্ট্রি করে নেন। শুধু তাই না সাব রেজিষ্ট্রিারের সিল সই নকল করে ভুয়া দলিল তৈরি করে যশোর শিক্ষা বোর্ডে জমা দেন। এসব অনিয়মের প্রেক্ষিতে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ৪ই জুলাই তারিখে যশোর শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান বরাবর এলাকাবাসির পক্ষে তাকে অপসারনের জন্য দরখাস্ত করা হয়। তদন্তে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দোষি সাবস্থ প্রমান হওয়ায় তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কতৃক তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ অক্টোবর তারিখে সভাপতি বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। এরপর ২০১২ খ্রিস্টব্দের ২১ নভেম্বর তারিখে কলেজ অধ্যক্ষকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের সভাপতি আছাদুজ্জামান। এরপর সাতক্ষীরা দুই আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ২০১৪ খ্রিস্টব্দের ৬ই জুন তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়াম্যান বরাবর ডিও লেটর দেন কলেজের নতুন সভাপতি নিয়োগ দানের জন্য। ডিও লেটারে এমপির মনোনিত প্রার্থী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন জোসিকে সভাপতি করার জন্য বলা হয়। এরপর সভাপতি হিসেবে জয়নুল আবেদীন জোসি অন্তভুক্ত হওয়ার পর ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটি অনুমোদন নিয়ে আসে। সভাপতি কমিটি অনুমোদন করে নিয়ে আসার এক সপ্তাহের মধ্যে দুতিনীবাজ অধ্যক্ষ আছাদুজ্জামান মোহনকে পুনরায় অধ্যক্ষ হিসেবে চেয়ারে বসানো হয়। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন কারি প্রভাষক শাহানারা খাতুন সানিকে মারধর করে কলেজ থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় তিনি জি/আর ২৫/১৩ তারিখে একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর মামলায় কলেজ অধ্যক্ষকে প্রধান আসামী করে জি/আর ৮৫৬ নং মামলা করেন প্রভাষক শাহানারা খাতুন সানি। বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ বোমা হামলা মামলায় তিনি ১ নং আসামী। মামলা নং জি আর ১০১৩/১৩। চাকুরি দেওয়ার নাম করে ১ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। মামলা নং সি/ আর ২২৭/১১। ইভটিজিং মামলা আছে কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা নং ৪৩২। হুমায়ুন কবির বাবলুকে বোমা মেরে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয় মামলা নং নন জি আর ২৪/১৫। সবকয়টি মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কিভাবে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন তা নিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোপের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসি অভিলম্বে দূনিতীবাজ অধ্যককে অপসারন করার দাবী জানিয়েছেন।
এব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ আছাদুজ্জামান মোহন বলেন, আমি কোন দিন সাসপেন্ড ছিলাম না। আমার নামে যে মামলা গুলো আছে দুই একটি বাদে সবগুলো নিম্পত্তি হয়ে গেছে। একটি মহল আমার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে।