জাতীয় স্কুল মিল নীতিমালা মন্ত্রিসভায় উঠছে আজ - দৈনিকশিক্ষা

জাতীয় স্কুল মিল নীতিমালা মন্ত্রিসভায় উঠছে আজ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে দেশের সব প্রাইমারি স্কুলে শিশুদের দুপুরের খাবার দেয়া হবে। বর্তমানে দেশের ১০৪টি উপজেলায় শুকনো ও রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে। এর বদলে শুধু শুকনো খাবার দেয়ার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে সরকার। প্রতিটি শিশুর জন্য দুপুরের খাবার বাবদ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২০ থেকে ২২ টাকা। এ সংক্রান্ত ‘জাতীয় স্কুল মিল নীতি-২০১৯’ অনুমোদনের জন্য আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে আরও রয়েছে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন, বাংলাদেশ প্রকৌশল গবেষণা কাউন্সিল আইনসহ বেশকিছু অবহিতকরণ প্রস্তাব। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। সোমবার (১৯ আগস্ট) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন উবায়দুল্লাহ বাদল।

‘জাতীয় স্কুল মিল নীতি-২০১৯’ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের ১০৪টি উপজেলার কিছু স্কুলে পরীক্ষামূলকভাবে রান্না ও শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। এসব স্কুলে শিক্ষার্থীর ভর্তি শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে। উপস্থিতির হার আগের তুলনায় ৫-১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব স্কুলে রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে সেখানে উপস্থিতির হার বেড়েছে ১১ শতাংশ আর শুকনো খাবার (বিস্কুট) দেয়া স্কুলগুলোতে বেড়েছে ৬ শতাংশ। শিক্ষার্থীদের রক্তস্বল্পতার হার কমেছে যথাক্রমে ১৬ দশমিক ৭ ও ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এসব স্কুলের শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হারও কমেছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সরকারের চলতি মেয়াদেই দেশের সব প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার দেয়া হবে। নানা জটিলতায় সেখানে শুকনো খাবার (ডিম, কলা ও উন্নতমানের বিস্কুট) দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকরা যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় কিভাবে নির্বাহ করা হবে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, রান্না করা খাবারের কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত নীতিতে। এতে প্রতি বছর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে ফান্ড দিচ্ছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফও)। তবে আগামীতে এ প্রকল্প সরকারের টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ সংক্রান্ত ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) চূড়ান্ত করা হবে। এতে রান্না করা ও শুকনো খাবার দুটো প্রস্তাবই থাকবে। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল যেটি পছন্দ করবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। একটি শিশুর জন্য প্রতিদিন ২০-২২ টাকা বরাদ্দ ধরে ডিপিপি তৈরি হচ্ছে।

প্রস্তাবিত নীতিতে বলা হয়েছে- প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী দেশের সব শিশুকে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে স্কুল মিল নীতির আওতায় আনা হবে। তাদের শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় যথার্থ আবদান রাখা যাবে। এ কার্যক্রম শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিসহ গ্রাম ও শহর, ধনী ও গরিবের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে শিক্ষার মানের ব্যবধান কমাতে সাহায্য করবে। শিক্ষার্থীদের মেধার উৎকর্ষ সাধন, চিন্তা ও কল্পনা শক্তির বিকাশ, সৃজনশীলতা এবং দক্ষ ও যোগ্য মানবসম্পদে পরিণত হতে ভূমিকা রাখবে। এটি কার্যকর হলে প্রাথমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তি, উপস্থিতির হার বৃদ্ধি, পাঠে মনোনিবেশ ও বিদ্যালয় ধরে রাখতে অবদান রাখবে।

শিশুদের পুষ্টির বিষয়ে এতে আরও বলা হয়েছে- ৩ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদার ন্যূনতম ৩০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসা নিশ্চিত করা হবে। বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ৫ দিন রান্না করা খাবার এবং একদিন উচ্চপুষ্টিমান সম্পন্ন বিস্কুট সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে পরামর্শ করে খাবার মেনু নির্ধারণ করা যাবে। খাদ্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে উদ্ভিদ ও আবহাওয়ার ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে সে বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণস্বাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক কেএম এনামুল হক যুগান্তরকে বলেন, এটি সরকারের একটি দরিদ্রবান্ধব শুভ উদ্যোগ। ভবিষ্যৎ শিশুদের প্রতি সরকারের বিনিয়োগও বটে। ক্ষুধা থাকলে পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়া যায় না। ফলে মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের প্রধান বাধা ক্ষুধা। নীতিমালা অনুযায়ী অনুগোষ্ঠীর চাহিদার ৫০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসার কথা। শিক্ষার্থীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে মানসিক বিকাশ দ্রুত হবে। এতে করে স্থানীয় জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয় সবজি চাষি ও রান্নাকারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তবে এটি পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। শিক্ষকদের এসব কাজে যত কম সম্পৃক্ত করা যায় ততই ভালো। সব ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে এ কার্যক্রমকে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডব্লিউএফওর সহযোগিতায় ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে দেশের ১০৪টি দারিদ্র্যপ্রবণ উপজেলার সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং হিসেবে বিস্কুট বিতরণ শুরু হয়। এছাড়া ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে বরগুনার বামনা, জামালপুরের ইসলামপুর এবং বান্দরবানের লামা উপজেলায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে দুপুরে রান্না করা খাবার বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। ৩১ ডিসেম্বর এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। প্রকল্পটির ধারাবাহিকতা রাখতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় স্কুল মিল’ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে একটি কমিটি গঠন করে। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে এ নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় স্কুল মিল নীতিমালা-২০১৯’র খসড়া চূড়ান্ত করেছে। সেটি অনুমোদনের জন্য আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে।

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.007533073425293