জাবি ক্যাম্পাসে ছি*নতাইকারীদের টার্গেট বহিরাগতরা - দৈনিকশিক্ষা

জাবি ক্যাম্পাসে ছি*নতাইকারীদের টার্গেট বহিরাগতরা

দৈনিকশিক্ষাডটকম, জাবি |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সন্ধ্যা নামলেই নম্বর প্লেটবিহীন মোটরসাইকেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছিনতাইয়ে বেরিয়ে পড়ে একাধিক ছিনতাইকারী চক্র। এসব চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে কয়েক জন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকায় ধরা পড়লেও বিশেষ বিবেচনায় ছাড়া পান।   তাদের প্রধান টার্গেট থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুরতে আসা বহিরাগতরা। বহিরাগত পরিচয় দিলেই জোরপূর্বক সবকিছু ছিনিয়ে নেয় এ চক্রগুলো। এছাড়া ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ছিনতাইয়ের প্রবণতা বাড়ছে।

জানা যায়, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখি মেলায় ঘুরতে এসে সপ্তম ছায়ামঞ্চ এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশ নামে এক শিক্ষার্থী। এ সময় তার সঙ্গে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো তিন নারী শিক্ষার্থী ছিলেন। ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, হলুদ রঙের মোটরসাইকেলে তিন জন এসে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনারা কি ক্যাম্পাসের?’ তখন তারা বহিরাগত পরিচয় দিতেই জোরপূর্বক সবকিছু ছিনিয়ে নেন। পরে মীর মশাররফ হোসেন হলের সড়ক দিয়ে পালিয়ে যায়।

এছাড়া ২০ জানুয়ারি একই জায়গায় ঘুরতে এসে শরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ছিনতাইয়ের শিকার হন। রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে বান্ধবীকে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসেছিলেন তিনি। পরদিন ২১ জানুয়ারি বান্ধবী নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে এসে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন অর রসিদ। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হলের গেটের সামনে গেলে অজ্ঞাতনামা কয়েক জন ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক নগদ টাকা ও বিকাশের মাধ্যমে আরো কিছু টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় সাভার ও আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী।

এছাড়া গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর আশুলিয়া এলাকার মো. ওমর আলী নামে এক মোবাইল মেকানিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন। ঐ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের (৫০তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী অর্ণব ও সিটি ইউনিভার্সিটির রোমিও রাজু নামে আরেক শিক্ষার্থীকে চাপাতিসহ হাতেনাতে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তারা। পরে তাদের আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সর্বশেষ গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে এসে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন চার বহিরাগত। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্তরা হলেন—ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, পরিসংখ্যান ও উপাত্তবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান নাজিজ ও এহসানুর রহমান রাফি। তারা তিন জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের (৫১তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। অন্যদিকে ছিনতাইয়ের শিকার কৃষ্ণ, উত্পল সরকার, সোহাগ বিশ্বাস ও দুর্জয় সরকার সাভারের ফোটনগর এলাকার বাসিন্দা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান হল, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ও শেখ রাসেল হলের দ্বিতীয় বর্ষের (৫১তম ব্যাচ) ১৫ থেকে ২০ জনের একটি ছিনতাইকারী চক্র ক্যাম্পাসে সক্রিয়। এছাড়া মীর মশাররফ হোসেন হলসহ কয়েকটি হলের তৃতীয় বর্ষ (৫০তম ব্যাচ) ও চতুর্থ বর্ষের (৪৯তম ব্যাচ) কয়েক জন শিক্ষার্থীও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। এমনকি স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কয়েক জন শিক্ষার্থীর একটি ছিনতাইকারী চক্র ক্যাম্পাসে সক্রিয়। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বহিরাগতদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। তাদের মধ্যে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত—এমন তথ্য আমার জানা নেই। তবে কেউ ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, ‘ছিনতাইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কয়েকটি চক্র জড়িত। ছাত্ররা জড়িত থাকায় প্রক্টরিয়াল বডিকে অবগত করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। এছাড়া ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ছিনতাইয়ের প্রবণতা বাড়ছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক প্রক্টর অধ্যাপক মো. আলমগীর কবির বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা কখনো কাম্য নয়। তারপরও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, সড়কে পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা করা ও গার্ডদের বসার স্থান নির্দিষ্টকরণসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপাচার্য স্যারকে চিঠি দিয়েছি।’

শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি কলেজ কমিটির সভাপতির যোগ্যতা এইচএসসি, গেজেট জারি - dainik shiksha কলেজ কমিটির সভাপতির যোগ্যতা এইচএসসি, গেজেট জারি নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক - dainik shiksha নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক মাদরাসা শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha মাদরাসা শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মদ্যপ অবস্থায় আটক শিক্ষক বরখাস্ত - dainik shiksha মদ্যপ অবস্থায় আটক শিক্ষক বরখাস্ত দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031929016113281