জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং দুর্নীতি ও সহিংসতার মদদদাতা হিসেবে ভিসি ফারজানা ইসলামের অপসারণ ও বিচার দাবি করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ শিক্ষক। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি একনেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪৫ কোটি টাকার উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা অনুমোদিত হয়। আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, পরিকল্পনায় অনেক গলদ ও অস্বচ্ছতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শুরু করতে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ সেই পরিকল্পনার নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কা জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ভিসি ও তার প্রশাসন তড়িঘড়ি প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চালিয়ে ৫০০ গাছ কেটে ফেলে। যেখানে এ ধরনের বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার করার নির্দেশনা আছে, সেখানে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার করা হয়েছে এবং শিডিউল ছিনতাইয়ের ঘটনাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ছাত্রলীগের কর্মীদের ফোনালাপ ফাঁস হলে জানা যায়, ঈদের আগে কথিত এক কোটি ৬০ লাখ টাকা ভিসি অবৈধভাবে ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়েছেন। সঙ্গত কারণেই আন্দোলনকারীরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতির বিষয়টি খোলাসা করার দাবি তোলেন। অথচ, এ দুর্নীতির বিষয়ে ভিসি অথবা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো তদন্তের উদ্যোগ দেখা যায়নি। বরং ধর্মঘটকালে সহকারী প্রক্টরের ওপর হামলার মিথ্যা অভিযোগে প্রশাসন অজ্ঞাতনামা ৫০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে। আমরা মনে করি, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ভিসি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ এবং নিরাপত্তা দেওয়ার মতো যোগ্যতাও হারিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় আমাদের দাবি, দুর্নীতিগ্রস্ত ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংসতার মদদদাতা এমন ভিসিকে পদচ্যুত করে তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি ও অনিয়মের সুষ্ঠু বিচার করা হোক। দ্বিতীয়ত, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার এবং আইনের আওতায় নেওয়া হোক; তৃতীয়ত, একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে জাবির দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।
বিবৃতিতে সই করা শিক্ষকরা হলেন- ফাহমিদুল হক, নাসির আহমেদ, কামরুল হাসান, আরিফুজ্জামান রাজীব, মামুন অর রশিদ, সামিনা লুৎফা, কাজী মামুন হায়দার, কাজলী সেহরীন ইসলাম, শেহরীন আতাউর খান, কামাল চৌধুরী, রুশাদ ফরিদী, সুবর্ণা মজুমদার, সৌম্য সরকার, অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, অর্পিতা শামস মিজান, সৌভিক রেজা, খাদিজা মিতু, মজিবুর রহমান, কাজী মারুফুল ইসলাম, মার্জিয়া রহমান, সাঈদ হাসিবুল হাসান চৌধুরী, কাজী ফরিদ, সাদাফ নূর, মাইদুল ইসলাম, আল মামুন, মোশাহিদা সুলতানা, আর রাজী, বখতিয়ার আহমেদ, আবদুল্লাহ বাকী, সিউতি সবুর, কাজী অর্ক রহমান, তাহমিনা খানম, কাবেরী গায়েন, রোবায়েত ফেরদৌস, তানজীমউদ্দিন খান ও গীতি আরা নাসরীন।