জিকে শামীমের জন্যই খুন হয়েছিল চবি ছাত্রলীগের দিয়াজ - দৈনিকশিক্ষা

জিকে শামীমের জন্যই খুন হয়েছিল চবি ছাত্রলীগের দিয়াজ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

কথিত কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা জিকে শামীমকে কাজ পাইয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী। প্রথমে তা আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসে দিয়াজকে খুন করা হয়েছে। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উত্তর ক্যাম্পাসে নিজ ভাড়াবাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দিয়াজের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় তার বাসা থেকে ২৫ লাখ টাকার একটি চেকও উদ্ধার করা হয়।

৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চবির কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবন নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হলেও তখন ছাত্রলীগের তৎপরতার কারণে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে জিকেবিএল কোম্পানি-দি বিল্ডার্সের (জেভি) নামে একটি মাত্র ফরম কেনা হয়। এই জিকেবিএলের স্বত্বাধিকারী জিকে শামীম। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানির তালিকাভুক্ত হয়। আর ওই বছরের ২৪ অক্টোবর চবির দ্বিতীয় কলা অনুষদ ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পায় জিকেবিএল।

দিয়াজের বোন ও আইনজীবী জুবাইদা সরোয়ার চৌধুরী নীপা বলেন, মূলত জিকেবিএল কোম্পানিকে ৭৫ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিতেই দিয়াজকে খুন করা হয়। জিকে শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হত্যাকাণ্ডের আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে।

অভিযোগ আছে, ৭৫ কোটি টাকার এ কাজটি পেতে চবি ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতাদের ২ কোটি টাকা দেয়া হয়। এর বাইরে তিন শিক্ষকের প্রত্যেকে ২০ লাখ টাকা করে পান। এ টাকার ভাগবাটোয়ারা কেন্দ্র করে চবি ছাত্রলীগের গ্রুপিং চরমে ওঠে। একপর্যায়ে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা চবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করে এবং দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর উত্তর ক্যাম্পাসের ভাড়াবাসায় দুইবার হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। এ ঘটনার পর দিয়াজের পরিবার ওই বাসা ছেড়ে চলে গেলেও দিয়াজ সেখানে একাই থাকতেন। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ওই ভাড়াবাসা থেকে হাটহাজারী থানার পুলিশ দিয়াজের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। তার বাসা থেকে উদ্ধার করা ২৫ লাখ টাকার চেকটি চবি দ্বিতীয় কলা অনুষদ ভবনের কমিশন সংক্রান্ত কিনা, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। ওই সময় ছাত্রলীগ নেতারা ওই কাজের কমিশন নিয়েই মূলত দ্বন্দ্বে জড়ান।

ঘটনার তিন দিন পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে প্রথম দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ২৩ নভেম্বরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয় দিয়াজ ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। তবে দিয়াজের পরিবার এটিকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে। ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। আসামির তালিকায় ছিলেন চবির সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু ও আবুল মনসুর জামশেদ।

অন্যদিকে দিয়াজের মায়ের আপত্তির পর আদালত সিআইডিকে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন। এর পর দিয়াজের লাশের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুলাই দেয়া ওই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজকে খুন করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত দিয়াজের মায়ের করা এজাহার হত্যা মামলা হিসেবে নেয়ার জন্য হাটহাজারী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

দিয়াজ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর চবির সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জামিনের জন্য আদালতে হাজির হন। আদালত তার আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। এ ঘটনায় আনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক চাকরিচ্যুতও করা হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি জামিনে ছাড়া পান। এ মামলায় আর কোনো আসামি গ্রেফতার হননি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে।

দিয়াজ হত্যার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দীন বলেন, মামলার তদন্তকাজ অব্যাহত আছে। সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাদীপক্ষের দেয়া তথ্যও আমরা যাচাই-বাছাই করছি

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032608509063721