গোটা পৃথিবী আজ এক কঠিন দুঃসময় পার করছে। এর আগে করোনা ভাইরাসের মতো অন্য কোনো মহামারি এক সাথে দুনিয়ার সব মানুষকে আতঙ্কিত করতে পেরেছে বলে আমার জানা নেই। পৃথিবীতে মানুষের বসবাস যেদিন শুরু হয়েছে, সেদিন থেকে রোগ-ব্যাধি মানুষের পেছনে লেগে আছে। বিভিন্ন সময় পৃথিবীতে মহামারির প্রাদুর্ভাব হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ মরেছে। মানব জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবার উপক্রম হয়েছে। এরপরও মানুষ থেমে থাকেনি। আত্মবিশ্বাস নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
পৃথিবী নিজ গতি পথে চলেছে। এর কারণ- সে সব মহামারি কেবল একটি দেশ কিংবা জনপদে আবদ্ধ থেকেছে। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। এ নিয়ে নানাজন নানা কথা বলতে পারেন। মানুষ তখন সমগ্র পৃথিবী ঘুরে বেড়াতে পারতো না। দেশে দেশে অবাধ যাতায়াত ছিল না। আজ মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে পারে। পূর্ব থেকে পশ্চিমে আর উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘুরে বেড়ায়। এক গ্রহ থেকে আরেক গ্রহে যায়। মুক্তবাজার অর্থনীতির সুবাদে এক দেশের পণ্য আরেক দেশে বিক্রি হয়। চীনের তৈরি পণ্য বিশ্বের সব বাজারে পাওয়া যায়। পৃথিবী জুড়ে কারো একচেটিয়া বাজার। পুরো পৃথিবী এখন গ্লোবাল ভিলেজ। চীনের উহান শহর থেকে করোনা ভাইরাস পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে সে সুবিধাটিই নিয়ে থাকতে পারে।
এ ভাইরাসটিই সম্ভবত প্রথম মহামারি, যেটি এক সঙ্গে গোটা পৃথিবীকে থমকে দিয়েছে। দুনিয়ার সব মানুষকে এক অজানা আতঙ্কে ফেলে রেখেছে। সারা বিশ্ব আজ স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। বিজ্ঞানীরা থ বনে গেছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞান মুখ থুবড়ে পড়েছে। আজও কেউ জানে না, ক্ষুদ্র এই ভাইরাসটির হাত থেকে বিশ্ববাসী কি করে রক্ষা পাবে? এটি যেন ঠিক ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পারমাণবিক বোমার আঘাতে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাশাকি শহর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। তৃতীয় এই বিশ্বযুদ্ধে করোনা ভাইরাসের ছোবলে ইতালি ও স্পেনের মতো উন্নত দেশ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হতে চলেছে। কর্তৃত্বের ছড়ি কিংবা অর্থনীতির চাবি হাতে তুলে নিতে কারা এই প্রমত্ত খেলায় মেতে উঠেছে? নাকি এটি নিছক কোনো রোগের ভাইরাস? আমেরিকা চীনের দিকে আর চীন আমেরিকার দিকে সন্দেহের তীর ছুড়ে মেরেছে। তারা মনে করে, দুনিয়ায় তারাই সবচেয়ে শক্তিধর। তারাই বুদ্ধিমান। যদি এটি কোনো জীবাণু অস্ত্র হয়ে থাকে, তবে যত শক্তিশালী হোক না কেন ইতিহাসের আদালতে তাদের একদিন হাজির হয়ে দণ্ড ভোগ করতেই হবে। তারা হয়ত জানে না, ইতিহাস কোনোদিন কাউকে ক্ষমা করেনি, করবেও না।
বিজ্ঞানীরা বসে নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে নিরলস কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবু কেউ ভাইরাসটির সাথে পেরে উঠতে পারছে না। এই ভাইরাসের ব্যাপারে বিশ্ববাসীর কোনো প্রস্তুতি ছিল না। আচমকা ঘূর্ণিঝড়ের মতো গোটা পৃথিবী লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। অনেক দেশে এমনকি আমাদের দেশেও করোনা ভাইরাস নির্ণয়ের পর্যাপ্ত কিট নেই। থাকলেও সেটি দিয়ে ভাইরাস নির্ণয়ে সময় লাগে। ব্যয়বহুলও বটে।
দেশে ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামের বেসরকারি সাহায্য সংস্থা করোনা ভাইরাসের কিট আবিষ্কারের সুসংবাদ দিয়েছে। এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. জাফরুল্লাহ চৌধুরি জানিয়েছেন, এই কিট দিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। খরচও কম পড়বে। এ বিষয়ে ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’-র সাথে কাজ করতে আমেরিকার মতো দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে। আমাদের জন্য এটি আনন্দ ও গৌরবের বিষয়। আমেরিকা কাঁচামাল যোগান দেবে আর আমাদের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সেটি তৈরি করে এপ্রিল মাসে বাজারে ছাড়বে। এ প্রসঙ্গে বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর কথা মনে পড়ে যায়। বেতার (রেডিও)’র ধারণাটি প্রথম তাঁর মাথায় এসেছিল। তাঁর চিন্তাধারাকে ডেভেলাপ করে ইতালির মার্কনি বেতার আবিষ্কারের কৃতিত্ব ইতালির ঘরে তুলে নেন। জগদীশ চন্দ্র বসু কিংবা বাংলাদেশকে কেউ এর ছিঁটেফোটা কৃতিত্ব দিতে যায়নি। এমনি করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র যে কিটটি আবিষ্কার করবে, একদিন হয়ত এর কৃতিত্ব আমেরিকা তার ঘরে তুলে নেবে। কৃতিত্ব যে-ই তুলুক এর ফল পেয়ে মানুষ উপকৃত হবে। আমরা কৃতিত্ব নয়, মানুষের কল্যাণ চাই।
বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরে এটি স্মরণ করা যথার্থ হবে যে, বঙ্গবন্ধু গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য ৩০ একর জমি দান করে এর নাম ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ রেখেছিলেন। সেই থেকে এটি মানুষ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে আজ কেবল বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর অনেকের কাছে পরিচিত একটি নাম। সেদিন কোনো এক টিভি চ্যানেলে ডা. মো. জাফরুল্লাহ চৌধুরি এক সাক্ষাৎকারে কৃতজ্ঞচিত্তে বঙ্গবন্ধুর নামটি স্মরণ করেন। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে ডা. চৌধুরি যখন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন, তখন বঙ্গবন্ধুর উদার পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিলেন।
আমাদের দুর্ভাগ্য যে, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বঙ্গবন্ধুর উদার পৃষ্ঠপোষকতা লাভের সুযোগ পাই নাই। যদি পেতাম তাহলে আমাদের শিক্ষা ও চিকিৎসা আজ বিশ্বমানে উন্নীত হয়ে যেত। এদেশে বেসরকারি শিক্ষা বলে কিছু থাকতো না। করোনা ভাইরাসের ভয়ে ডাক্তার ও নার্স রোগী ফেলে চলে যেত না। আমাদের আরও দুর্ভাগ্য যে, করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের জাতির জনকের জন্ম শতবার্ষিকী মনের মতো করে উদযাপন করতে পারি নাই। আরেক শতবার্ষিকীতে আমরা কেউ বেঁচে থাকবো না। করোনার কারণে এবার মহান স্বাধীনতা দিবসের সকল আনন্দও আমাদের বিসর্জন দিতে হয়েছে। এভাবে করোনা নামের ভাইরাসটি আজ সারা দুনিয়ার মানুষের সুখ শান্তি কেড়ে নিয়েছে। জানি না আবার কোনোদিন বিশ্বময় শান্তি ফিরে আসবে?
এটি অস্বীকার করার উপায় নেই, আমাদের দেশটির প্রতি মহান স্রষ্টার এক অপরিসীম রহমত ও অপার করুণা রয়েছে। যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে তিনি আমাদের প্রত্যয়ী ও আশাবাদী করে তুলেন। স্রষ্টার অদৃশ্য শক্তিটি আমাদের আগলে ধরে হেফাজত করে রাখে। আবহাওয়া ও জলবায়ু বরাবর আমাদের শরীর স্বাস্থ্যর অনুকূলে থাকে। পৃথিবীর কোনো কোনো দেশ খুব ঠাণ্ডা আবার কোনো কোনো দেশ খুব গরম। খুব ঠাণ্ডা বা খুব গরম আমাদের কোনোটিই নেই। বেশি গরম কিংবা বেশি ঠাণ্ডা স্বাস্থ্যকে সুস্থ্য রাখার জন্য সহায়ক নয়। আবহাওয়া ও জলবায়ুর কারণে করোনা ভাইরাস আমাদের দেশে খুব একটা কাবু করতে পারবে না বলে অনেকে আশাবাদী।
করোনা ভাইরাস শহর প্রধান ও শিল্প প্রধান দেশগুলোতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। এটি শহরায়ন ও শিল্পায়নের আগ্রাসন বলে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন। আমাদের গ্রাম প্রধান দেশ। শিল্প কারখানা সেভাবে গড়ে উঠেনি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা কিছুটা নিরাপদ হলেও নাক ডেকে ঘুমিয়ে থাকার অবকাশ নেই। নিজ নিজ গৃহে নিরাপদ দূরত্বে থেকে আমরা নিজেদের সুরক্ষা করতে পারি। ঘন ঘন সাবান বা ডিটার্জেন্ট দিয়ে হাত ধুঁয়ে এবং প্রয়োজনে কোথাও যেতে মুখে মাস্ক লাগিয়ে আমরা কেবল নিজেকে নয় স্বদেশকেও বাঁচাতে পারি। কেবল একটু সচেতনতাই আমাদের এই ভয়াবহ ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। পাবলিক গেদারিং সৃষ্টি না করে পনেরটি দিন কোয়ারেন্টাইন মেনে চললে ইনশাল্লাহ আশঙ্কার কোনো কারণ নেই।
সচেতনতার বিষয়ে আমরা অনেকের চেয়ে পিছিয়ে আছি। বিশেষ করে গাঁও-গেরামে সচেতনতার বড় বেশি অভাব। ধর্মান্ধতা ও নানা কুসংস্কার গ্রামের মানুষকে সব সময় আবদ্ধ করে রাখে। আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণে এ বিষয়গুলো সহায়ক ভূমিকা রাখতেই পারে। সেটি হলে চীন, ইতালি, স্পেন ইত্যাদি দেশকে ছাড়িয়ে যেতে আমাদের তেমন বেশি দিন লাগার কথা নয়। আমাদের লোকজনকে এ সহজ সমীকরণটি বুঝাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে মাঠে নামতে হয়েছে। দিনরাত নির্ঘুম কষ্ট করে তারা আমাদের সহজ বিষয়গুলো বুঝাতে পারছেন না। আমরা এতই অবুঝ!
দেশে এখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার। জাতির জনকের কন্যা করোনা থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য বাবার জন্মশতবার্ষিকীর সব অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন। ত্বড়িৎ পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে নামিয়েছেন। দেশ অঘোষিত লকডাউন করে দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের মতো দেশ লকডাউনে যেতে অনেক বিলম্ব করেছে। আমরা অতি অল্প সময়ে অঘোষিত লকডাউনে যেতে পেরেছি। সে কেবল একজন শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার জন্য সম্ভব হয়েছে।
স্কুল-কলেজ বন্ধ দিলেও কোটি শিক্ষার্থীর কথা ভেবে সংসদ টেলিভিশনে ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ শিরোনামে অনুষ্ঠান ২৯ মার্চ থেকে নিয়মিত শুরু করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ সময়ে এটি উপযুক্ত সিদ্ধান্ত বটে। একজন শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রীর জন্য এই দূর্যোগময় মুহূর্তে এটিই সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত। আমি জানি না দুনিয়ার উন্নত দেশগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য এরকম কোনো নিরাপদ পাঠদান ব্যবস্থা আয়োজন করতে পেরেছে কি না? মনে হয় এখনো পারে নাই।
কেবল ‘সংসদ বাংলাদেশ’ নয়, দেশের অন্যান্য টিভি চ্যানেলেও উক্ত অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা উচিত। বিশেষ করে বিটিভিতে (বাংলাদেশ টেলিভিশন) অনুষ্ঠানটি প্রচার করলে প্রত্যন্ত এবং প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। সংসদ বাংলাদেশ টিভি চ্যানেলটি সব জায়গা থেকে দেখা যায় না। এছাড়া আজকাল টাচ্ মোবাইলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া এখন অনেকে বাড়িতে টিভি রাখে না। তাই ইউটিউবে ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ অনুষ্ঠানটি সংযুক্ত করে দিলে ভালো হয়। ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে কিংবা কিশোর বাতায়নে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা নিজের ইচ্ছেমতো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিষয়টি ভালো করে বুঝে নিতে পারে। টিভিতে শিক্ষার্থীদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখার সুযোগ নেই।
আইসিটিতে এক্সপার্ট বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকরা নিজ নিজ বিষয়ের উপর মডেল কন্টেন্ট তৈরি করে নিজের আলাদা ফেসবুক পেজে তা আপলোড দিতে পারেন। শিক্ষক বাতায়ন থেকে ডাউনলোড করেও বিভিন্ন বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের কন্টেন্ট ইউটিউব কিংবা ফেসবুক পেজে আপলোড করা যেতে পারে। টিভি, ইউটিউব, কিশোর বাতায়ন, গুগল, ফেসবুক পেজ ইত্যাদির মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক পাঠদান চালু করে শিক্ষার্থীদের ঘরে ধরে রাখা গেলে একদিকে পড়াশুনার ঘাটতি দূর হবে, অন্যদিকে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
স্কুল-কলেজ এখন বন্ধ। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়েছে। আরও সম্প্রসারণ করা লাগে কি না, কে জানে? বৈশ্বিক পরিস্থিতি কেবলি আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। এ সময়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের তেমন কোনো কাজ নেই। গাঁও-গেরামের মানুষদের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সচেতন করার বিষয়ে তাদের কাজে লাগানো যেতে পারে। মসজিদের ইমাম সাহেবদের ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কার দূর করার কাজে লাগানো যায়। মানুষ এখনো স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও মসজিদের ইমামদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে। সরকার বলুক আর নাই বলুক, শিক্ষক সমাজ ও ইমাম সাহেবদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজটি করা দরকার। একমাত্র সচেতনতাই আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, লকডাউন মেনে তাবৎ দুনিয়া করোনার বিরুদ্ধে এখন অবস্থান নিয়েছে। এসব নিয়ে ধর্মান্ধতা কাম্য নয়। নিজের পরিবার, স্বজন ও পাড়া-পড়শিকে এ বিষয়ে সচেতন করতে পারলে বেঁচে যাবে বাংলাদেশ। করোনা নিরোধে বিশ্বে হয়ে যাবে রোল মডেল। যক্ষ্মা, হাম, পোলিও, কলেরা, ডায়রিয়া ইত্যাদি প্রতিরোধে আমরা সফলতা দেখিয়েছি। এক সময় কলেরা ও ডায়রিয়া হলে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়েছে। এখন এসব কিছুই না। পাঁচ টাকার স্যালাইনের কাছে মহামারি খ্যাত কলেরা ও ডায়রিয়া হার মেনেছে।
ইনশাল্লাহ একদিন আমরা করোনাকে পরাজিত করবোই। করোনামুক্ত বাংলাদেশ একদিন করোনামুক্ত পৃথিবী গড়ে তুলার স্বপ্ন দেখাবে- স্বাধীনতার মাসে বৈশ্বিক এই দুর্দিনে সব মানুষের জন্য শুভ কামনা। করোনার বিপর্যয় একদিন শেষ হবে, ইনশাল্লাহ। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ন্যায় বিপর্যস্ত মানুষজনকে আজ এভাবেই আশ্বস্ত করতে চাই-
“মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়
আড়ালে তার সূর্য হাসে,
হারা শশীর হারা হাসি
অন্ধকারেই ফিরে আসে।”
লেখক : অধ্যক্ষ, চরিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কানাইঘাট, সিলেট এবং দৈনিক শিক্ষার নিজস্ব সংবাদ বিশ্লেষক।