এখন থেকে জেলা প্রশাসকরাই (ডিসি) হবেন মাদরাসার নিয়োগে বোর্ডে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি। এতদিন অধিদপ্তরে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষকরা এই দায়িত্ব পালন করতেন। তাদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ বিস্তর। টাকার বিনিময়ে তারা অযোগ্য লোকদের নিয়োগ দিতেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মাদরাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিউদ্দীন স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্ব স্ব জেলার দাখিল, আলিম, ফাযিল ও কামিল মাদরাসায় শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে জেলার প্রশাসক মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনীত হবেন বা মনোনয়ন দিবেন। বর্তমানে এন্ট্রি লেভেলে (প্রভাষক, মৌলভী ইত্যাদি) নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব এনটিআরসিএর। আর অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপারসহ কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা পরিচালনা পর্ষদের হাতে। ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে ডিসিরা থাকার ফলে নিয়োগ বোর্ডে আমলাদের ক্ষমতা বাড়তে পারে।
এদিকে, এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক নেতারা।
এ বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেসীনের মহাসচিব শাব্বির আহমেদ মোমতাজী এই আদেশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, সারাদেশের শিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসনকে মর্যাদা ও কর্তৃত্ব শূন্য করার এটা একটা উদ্যোগ। আমরা এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য মনে করি না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই এটা মানবো না। আমরা বহুবার দেখা করে বলেছি শিক্ষা প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে নিয়োগ কমিটি করার জন্য। কিন্তু তা না করে এখন উল্টো যে কাজটা অধিদপ্তর করেছে তাতে সারাদেশে অসন্তোষ হবে। শিক্ষার ক্ষতি হবে। তাই এটা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিৎ।
এদিকে স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সাজাহান আলম সাজু বলেছেন, আমরা মনে করি হঠাৎ করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। এতে অসন্তোষের সুযোগ নেবে সরকার বিরোধীরা। তাই সকল স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনা করা জরুরি। অন্যথায় সমস্যা বাড়তে পারে। তাছাড়া এতে নিয়োগে যে অনিয়ম দুর্নীতি বাড়বে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে?
আদেশের কপি দেখুন: