তবুও অদম্য সবুজ - Dainikshiksha

তবুও অদম্য সবুজ

রাজশাহী প্রতিনিধি |

sobuz

মা টিউশনি করে টাকা জমিয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে ছেলে ভর্তি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকায় যাওয়ার টাকা ছিল না তাঁর। রাত-দিন তিনি ভ্যান চালিয়েছেন। এই টাকা নিয়েই শুরু হচ্ছে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়জীবন। তাঁর স্নাতকের ক্লাস শুরু হচ্ছে কাল রোববার।

অদম্য এই শিক্ষার্থীর নাম সবুজ কুমার। বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কলিগ্রামে। স্বপন কুমার ও নন্দরানির একমাত্র সন্তান সবুজ কুমার। বসতভিটা ছাড়া স্বপনের আর কোনো জমি নেই। স্বপন কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। আর নন্দরানি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন। এলাকার ছোট বাচ্চাদের পড়াতেন তিনি। স্বামীর রোজগারে সংসার চলত আর নন্দরানি তাঁর সামান্য সঞ্চয় জমিয়ে রাখতেন। অসুস্থতার কারণে একসময় স্বপন কাঠমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে দেন। এ কারণে পঞ্চম শ্রেণির পর ছেলেকে পড়ানোর সংগতি ছিল না তাঁদের। কিন্তু সবুজ দমেননি। বাড়ির পাশের সেলুনে কাজ নেন। সারা দিন সেলুনে কাজ করেন আর পরীক্ষার সময় পরীক্ষা দেন। এভাবেই উপজেলার কালিদাসখালী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তাঁর জিপিএ ছিল ৪ দশমিক ২৫। তবে শুধু সেলুনের আয় দিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে পড়া সম্ভব হচ্ছিল না। তাই অন্য একটি দোকানে কাজ নেন। এই দোকানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাঁর কাজ ছিল দা, বঁটি বিক্রি করা। বিনিময়ে মালিক তাঁকে দৈনিক ১২৫ টাকা দিতেন। তবে পরীক্ষার দিন সকালেও তাঁকে দোকান বসিয়ে যেতে হতো। এভাবে পরীক্ষা দিয়ে উপজেলার আবদুল গণি কলেজ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে সবুজ জিপিএ-৫ পান। ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান। কিন্তু ভর্তির জন্য তাঁর সাড়ে ১৭ হাজার টাকার প্রয়োজন পড়ে। পাশাপাশি আনুষঙ্গিক খরচ রয়েছে। এবার মা নন্দরানি তাঁর ব্যাংকের সঞ্চয়ে হাত দেন। সেটি ভাঙিয়ে পান ২৬ হাজার টাকা। সেখান থেকেই ছেলের ভর্তির ব্যবস্থা হয়।

ছেলের এইচএসসি পরীক্ষার পরই মা নন্দরানি একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ৩৬ হাজার টাকায় একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যান কেনেন। বাবা-ছেলে ভাগাভাগি করে সেই ভ্যান চালান।

৪ জানুয়ারি বাঘায় গিয়ে উপজেলার নারায়ণপুর বাজারে সবুজ কুমারকে পাওয়া যায়। ভ্যানে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন। সবুজের সঙ্গে বাড়িতে গিয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা হয়। মা নন্দরানি বলেন, ‘আমার ছেলের মতো কষ্ট করে কেউ পড়াশোনা করে না। এত কষ্ট না করে আমি সোনার দোকানে কাজ শিখতে বলেছিলাম। ছেলে শোনেনি। বলেছে, যত কষ্টই হোক সে পড়া ছাড়বে না।’

জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘পরীক্ষা দিতে গিয়ে জগন্নাথ হলের এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তিনি একটা কক্ষে ফ্লোরিং (মেঝেতে ঘুমানোর) করার ব্যবস্থা করে দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু গতকাল শুক্রবার গিয়ে দেখি, সেখানে অন্য এক ছাত্র আগেই উঠে গেছে।’

রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064148902893066