সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দেওয়ানিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাস্তার জমি দখল করে অবৈধ মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও তাঁর ভাইসহ প্রভাবশালীরা এটি নির্মাণ করেছেন।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দেওয়ানিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে অবৈধ মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও তাঁর ভাইসহ এলাকার প্রভাবশালীরা এই জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এলাকাবাসী জানায়, কলিয়া-তালা ভায়া কেসমতঘোনা সড়কের পাশে ৮১ শতাংশ জমির ওপর দেওয়ানিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত। বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে দেওয়ানিপাড়া বাজারসহ রাস্তা। সরকারি রাস্তা এবং বিদ্যালয়ের ভবনের মধ্যস্থলের ফাঁকা জমি এর আগে দখল করে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছিল।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সেই মার্কেট উচ্ছেদ করে জমি উদ্ধার করে। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আলতাফ হোসেন সরদার বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। এর পর থেকে তাঁর নেতৃত্বে পূর্ব পাশের জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল শিক্ষকদের সহযোগিতায় সভাপতি আলতাফ হোসেন সরদারসহ তাঁর ভাই আক্কাচ সরদার, মুছা সরদার, নাজের সরদার, একই এলাকার রেয়াজুদ্দীন সরদার, ছিদ্দিক সরদার, আনছার সরদার ও শফিকুল সরদারসহ একাধিক ব্যক্তি মার্কেট নির্মাণ করে।
দখলকারীরা বিদ্যালয়ের জমিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একাংশ দখল করেছে। উঁচু পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করায় বিদ্যালয়ের ভবনের পূর্ব পাশ দিয়ে আলো ও বাতাশ প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হয়ে স্যাঁতসেতে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ছাড়া সরকারি রাস্তার ওপর দোকান নির্মাণ করায় যানবাহনে চলাচলকারীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। এ বিষয়ে কিছু জানি না।’ তবে জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক আব্দুর রব জানান, বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের সরকারি রাস্তা থেকে শুরু হয়ে ৮১ শতাংশ জমি রয়েছে। এই জমির ওপর মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আলতাফ সরদার জানান, রাস্তা এবং বিদ্যালয়ের সামান্য জমির ওপর দোকানগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সেখানে তাঁর কোনো দোকান নেই।
তালা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জমির চৌহদ্দি ও দখলীয় পরিমাণ নির্ণয় করে সার্বিক অবস্থার প্রতিবেদন দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ১৫ দিন পার হলেও প্রধান শিক্ষক প্রতিবেদন জমা দেননি।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয় ও রাস্তার জমিতে মার্কেট করে টিকে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা অবশ্যই নেয়া হবে।