সারাদেশের লক্ষাধিক নন-এমপিও শিক্ষক-কমচারীদের জন্য ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জরুরি আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছে। তবে, মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের অদক্ষতায় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের লোভের শিকার হয়ে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী অনুদানের টাকা পাননি। আবার শিক্ষক না হয়েও অনেকে অনুদানের টাকা পেয়েছেন। এমপিওভুক্ত এমনকি সরকারি শিক্ষক হয়েও অনেকে নন-এমপিওদের অনুদানের তালিকায় নাম উঠিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় এমনই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার ৩ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীসহ ব্যাংক কর্মকর্তা এবং গৃহিণীর বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে নন-এমপিও শিক্ষকদের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনুদানের ৫ হাজার টাকা পেয়েছেন স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজার মহিউদ্দিন আহমেদ আল ফারুক। এইচ এ ডিজিটাল কলেজের খণ্ডকালীন নন-এমপিও শিক্ষক হিসেবে তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা। আর এ কাজে তাকে সার্বিক সহায়তা করেছেন কলেজটির অধ্যক্ষ ও অভিযুক্ত কর্মকর্তার স্ত্রী এস কে হোসনে আরা শিশির। ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামীকে অনুদানের টাকা পাইয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষ এস কে হোসনে আরা শিশির দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অনুদানের তালিকায় কলেজের ৩২জন শিক্ষক-কর্মচারীর নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে আমার স্বামী গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজার মহিউদ্দিন আহমেদ আল ফারুক কলেজের প্রভাষক হিসেবে অনুদানের ৫ হাজার টাকার চেক গ্রহণ করেছেন। তাকে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে অনুদানের তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। এটা ভুল হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে এটা আর করব না।
গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজার মহিউদ্দিন আহমেদ আল ফারুক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এটা ভুল হয়ে গেছে। কলেজের প্রিন্সিপাল আমার স্ত্রী চেকটি নিয়ে এসেছে। চেক এখনো ক্যাশ করেনি। চেকটি ফেরত দিয়ে দেব।
এ ব্যাপারে গ্রামীণ ব্যাংকের জোনাল ম্যানেজার জীবন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, হয়ত তার স্ত্রী লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে এই কাজটি করেছেন। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।
জানা গেছে, অনুদানের তালিকায় ব্যানবেইসের তালিকার বাহিরে একাধিক শিক্ষকের নাম রয়েছে। আরও এধরনের শিক্ষক-কর্মচারীদের নাম আছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। এ উপজেলায় এমপিওভুক্ত আরো দুইজন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী নাম অনুদানের তালিকায় রয়েছে।
তারাকান্দা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিক ৩ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর অনুদানের টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এমপিওভুক্ত ৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী অনুদানের তালিকায় নাম রয়েছে। তাদেরকে অনুদানের চেক দেয়া হবে না। চেকের টাকা ফেরত দেয়া হবে।
অনুদানের তালিকায় ব্যাংক ম্যানেজারের নাম রয়েছে এমন তথ্য জানানো হলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমি জানতাম না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।