নিষিদ্ধ বইয়ে কোটি টাকার খেল - দৈনিকশিক্ষা

নিষিদ্ধ বইয়ে কোটি টাকার খেল

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

গাইড বই, নোট বই, সহায়ক বই—সবই নিষিদ্ধ। কিন্তু সংঘবদ্ধ একটি চক্র নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রকাশ্যেই বিক্রি করছে গাইড বই। আর গাইড বই বিক্রির জন্য শিক্ষক, শিক্ষক সমিতির নেতা, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, এমনকি গৃহশিক্ষকদেরও লাখ লাখ টাকা উৎকাচ দেওয়া হচ্ছে। ২০টির মতো প্রকাশনা সংস্থা বৃহত্তর যশোর জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এরই মধ্যে কয়েক কোটি টাকা বিলি-বণ্টন করেছে। উৎকাচ দেওয়ার ক্ষেত্রে পাঁচটি প্রকাশনা সংস্থা এগিয়ে রয়েছে। সংস্থাগুলোর শতাধিক কর্মী নানা কায়দায় গাইড বই বিক্রির জন্য জেলা সদর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছে। গাইড বইয়ের জালে আটকা পড়ে অভিভাবকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে মেধাশূন্য হতে বসেছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু অজানা কারণে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো তৎপরতা নেই। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন ফখরে আলম।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সাল থেকে সরকার প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বেশির ভাগ বিষয়ে সৃজনশীল পদ্ধতির বই বের করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে বিতরণ করে আসছে। কিন্তু গাইড বই সিন্ডিকেট সৃজনশীল পদ্ধতির বইয়েরও নোট বুক, গাইড বই ও সহায়ক গ্রন্থ বাজারে ছেড়েছে।

খবর নিয়ে জানা যায়, একটি বিষয়ে গাইড বই কেনার কোনো সুযোগ নেই। বাধ্যতামূলকভাবে গাইড বইয়ের সেট কিনতে হয়। এ ক্ষেত্রে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এক সেট গাইড বইয়ের দাম এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা। নবম থেকে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার এক সেট গাইড বইয়ের দাম চার হাজার ৫০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা। নবম থেকে দশম শ্রেণির বাণিজ্য শাখার এক সেট বইয়ের দাম চার হাজার ২০০ থেকে চার হাজার ৫০০ টাকা। নবম থেকে দশম শ্রেণির মানবিক শাখার এক সেট বইয়ের দাম চার হাজার থেকে চার হাজার ২০০ টাকা। প্রকাশনা সংস্থাগুলো খুবই উচ্চমূল্যে বইয়ের গায়ের দামে গাইড বই বিক্রি করছে। আর এভাবেই শিক্ষাকে কবজা করে শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আরো অভিযোগ রয়েছে, চক্রের পক্ষ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা হিসাবে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮০ হাজার টাকা থেকে লাখ টাকা উৎকাচ দেওয়া হচ্ছে। গাইড বই সিন্ডিকেট লাইব্রেরি মালিকদেরও তুষ্ট করছে।

এ ব্যাপারে যশোর সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে এইটে উঠেছে। এখন সে বলছে বই কিনতে দুই হাজার টাকা লাগবে। এত টাকা আমি কোথায় পাব?’

মাহিদিয়া গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, অনেক শিক্ষকের সৃজনশীল পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নেই। তারা পরিশ্রম করে ছাত্রদের পড়াতে চায় না। ফলে গাইড বইয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। আর ছাত্রদেরও গাইড বই কিনতে বাধ্য করেন।

এ ব্যাপারে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ এস এম খালেক বলেন, ‘নিষিদ্ধ গাইড বই বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। যে শিক্ষক প্রকাশনা সংস্থার কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে গাইড বই বিক্রি করবে—তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054531097412109