পদ হারানোর জন্য মিডিয়াকে দায়ী করলেন ওমর ফারুক - দৈনিকশিক্ষা

পদ হারানোর জন্য মিডিয়াকে দায়ী করলেন ওমর ফারুক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

৭ বছর দায়িত্বে থাকার পর ক্যাসিনোকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগসহ নানা কারণে যুবলীগের শীর্ষ পদ থেকে বাদ পড়েছেন ওমর ফারুক চৌধুরী। রোববার তাকে সংগঠনের এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন যুবলীগের সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তবে ওমর ফারুক মনে করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার পেছনে দায়ী তাকে ঘিরে গণমাধ্যমের অতিরঞ্জিত খবর। মিডিয়া ট্রায়ালে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

যুবলীগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর দুদিন চুপচাপ ছিলেন ওমর ফারুক। সোমবার তিনি গণমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া দেন। এ সময় তিনি পদচ্যুত হওয়ায় গণমাধ্যমকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে এখনও তেমন কিছু প্রমাণ হয়নি। তবে যা হয়েছে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে হয়েছে। হোক; গণমাধ্যম আজ স্বাধীন এবং গণমাধ্যম স্বাধীন হওয়াই উচিত।

গণমাধ্যমে খবরের কারণে তাকে যুবলীগ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে দাবি করে ওমর ফারুক বলেন, মিডিয়া ট্রায়ালেই আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে। স্বাধীন গণমাধ্যম অনেক কিছুই লিখেছে। এ কারণে আমাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

ওমর ফারুকের ভাষ্য, ‘আপনারা (সাংবাদিক) লেখনীর মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, আমি আর দল করতে পারব না, রাজনীতি করতে পারব না। মিডিয়া ট্রায়াল শেষ। আমাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এর মানে ‘ইউ আর নো মোর’। এখন আমি যতই সত্য কথা বলি, তা মিথ্যা ফিকশন হয়ে যাবে। তাই আর কিছু বলতে চাই না।’

ক্যাসিনোকাণ্ডে নাম আসার পর পদচ্যুত হওয়ার আগেই আড়ালে চলে যান ওমর ফারুক। প্রায় এক মাস যাননি দলীয় কার্যালয়ে। আসন্ন কংগ্রেসের কার্যক্রম থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। এ বিষয়ে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যমে যা লেখা হচ্ছে, তাতে কি আর সানন্দে বাইরে যাওয়া যায়? সে জন্য বাইরে যাই না, ঘরেই থাকি। আমার উচিত সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় নিজেকে স্বচ্ছ প্রমাণ করা, সেই প্রক্রিয়াতেই আছি।

তিনি যোগ করেন, ‘আমি তো শাস্তি পেয়েছি-ই। কয়েক দিন ধরে গৃহবাস এবং রোববার দল থেকে গেট আউট। কষ্ট যা পাওয়ার পেয়েছি। সর্বোচ্চ কষ্ট পেয়েছি। এখন তো আর রাজনীতি করতে পারব না, নতুন যাত্রা শুরু করতে হবে।’

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে ওমর ফারুক বলেন, ‘সম্রাট রিমান্ডে কী বলেছেন তা আপনি নিজে দেখেছেন বা শুনেছেন কী? উনি (সম্রাট) যা খুশি বলতে পারেন। এসব তথ্য আমলে নিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া কেমন হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছি।’

জানা গেছে, তামাকের বিকল্প ‘টেন্ডু পাতা’ বিক্রির মাধ্যমে তার পেশাগত জীবন শুরু হয় ওমর ফারুক চৌধুরীর। বিড়ি শ্রমিক লীগ, জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন যুব সংহতির রাজনীতি করে আসা ওমর ফারুক ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুলাই সম্মেলনের মাধ্যমে ওমর ফারুক চৌধুরীকে চেয়ারম্যান ও হারুনুর রশীদকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবলীগের চেয়াম্যান করা হয়। দুই মাস পর ১৪৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয় তিন বছরের জন্য। পরে আরও তিনজনকে পদ দিয়ে ১৫১ পূর্ণ করা হয়।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দে যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটি নয়, সব বিষয়ে তার সিদ্ধান্তই শেষ কথা হয়ে দাঁড়ায়। তার দাপটে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারাও টু শব্দটি পর্যন্ত করার সাহস পাননি।

অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার পর কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিজের অনুগতদের বসিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। ঢাকা মহানগর ও দেশব্যাপী জেলা কমিটিগুলোও হয়েছেন তার পকেটের লোক দিয়ে।

নিজেকে তরুণ ভাবাপন্ন ৭১ বছর বয়সী ওমর ফারুক চৌধুরী যুবলীগের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই একক ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। শুরুতে সাবেক নেতাদের পরামর্শ ছাড়াই একটি ঢাউস কমিটি গঠন করেন তিনি। অভিযোগ আছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি অনেক নেতাকে কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। পদভেদে ১০ লাখ থেকে শুরু করে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। ফ্রিডম পার্টি ও যুবদলের অনেকে টাকার বিনিময়ে ঠাঁই পেয়েছেন যুবলীগে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন।

ওমর ফারুক চেয়ারম্যান হওয়ার পর যুবলীগে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন সুবিধাবাদী ও দুর্বৃত্তরা। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এক সময়কার পিয়ন কাজী আনিসুর রহমান কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক পদ পেয়ে যান ওমর ফারুকের কল্যাণে। পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে এমন অনেককে নেতা বানানোর ক্ষেত্রে যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানের ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিযোগ আছে। কাজী আনিস যুবলীগ অফিসের পিয়ন থেকে নেতা হন এবং এখন অনেক বিত্তবৈভবের মালিক। তিনি যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর ‘কালেক্টর’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। ৩০ লাখ থেকে কোটি টাকার বিনিময়ে আনিসের মাধ্যমে পদ পেয়েছেন অনেকেই।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067870616912842