পাঠ্যবইয়ের ১২শ’ কোটি টাকা বাচাঁনো হচ্ছেনা কার স্বার্থে? - দৈনিকশিক্ষা

পাঠ্যবইয়ের ১২শ’ কোটি টাকা বাচাঁনো হচ্ছেনা কার স্বার্থে?

আমিরুল ইসলাম কাগজী |

এ বছরও বিনামূল্যে পাঠ্য বই ছাপানো হচ্ছে। আর এ জন্য ছাপাখানাগুলো ব্যস্ত মুদ্রণ ও বাঁধাই কাজে। ডিসেম্বরের মধ্যেই বইগুলো পাঠানো হবে স্কুলগুলোতে। এ বছর ছাপা হচ্ছে ৩৫ কোটি বই, যার খরচ প্রায় ১ হাজার ২০০  কোটি টাকা। প্রশ্ন হলো এবছর কেন নতুন বই ছাপাতে হবে? গত বছর যে বই ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছিল সেগুলো তারা খুলে দেখার সুযোগ পায়নি। সেগুলো একেবারে নতুন অবস্থায় পড়ে আছে।

সরকার যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবার সবাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে তাই ১ জানুয়ারি সব শিক্ষার্থীকে কষ্ট করে তাদের সব বই নিয়ে বর্তমান ক্লাসে উপস্থিত হতে বলতে পারে। এরপর ক্লাস টিচার শ্রেণিকক্ষে গিয়ে বলবেন বাঁশিতে যখন ফুঁ দেয়া হবে তখন তোমরা বই রেখে সারিবদ্ধ হয়ে সুশৃঙ্খলভাবে উপরের শ্রেণিতে গিয়ে বসো। এমন একটা গেজেট বিজ্ঞপ্তি দিলেই সরকার কমছে কম ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারতো। সেটা না করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) দেশের ১৫১ টি প্রেসকে এই ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার বই ছাপার দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছে। গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, ‘৩১ডিসেম্বরের মধ্যে বই ছাত্র ছাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার জন্য এনসিটিবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘুম হারাম করে রাতদিন পরিশ্রম করছেন।’

প্রশ্ন হলো; এবছর এই ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে কার স্বার্থে এবং কাদের বড়লোক করার মিশন সফল করতে? যে সমস্ত পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে এবছর নতুন বই ছাপানো জায়েজ করা হচ্ছে সেটা আগামী বছরও করা যেত। সময়তো ফুরিয়ে যাচ্ছে না। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে করোনা ভাইরাস খুব শিগগির আমাদের ছেড়ে যাচ্ছে না সেক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত কি হবে জানি না। ইতিমধ্যে করোনার ধাক্কায় আমার দেশের এনালগ শিক্ষকরা ডিজিটাল হয়ে গেছেন। তারা এখন বর্তমান প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছেন। তারা এখন অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন। করোনা ভাইরাস আমাদের কেবল স্থবির করে দেয়নি,কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাজের গতি বেগবান করে দিয়েছে। 

একজন শিক্ষক এখন একই সময়ে ঘরে বসে অনলাইনে ক্লাস নিয়ে চাকরি সামলাচ্ছেন পাশাপাশি ঘরগৃহস্থলীতে গিন্নিকে সাহায্য করছেন। সবই সম্ভব হয়েছে করোনার করুণায়।

তাহলে এই করোনাকে মডেল ধরে এনসিটিবি  এ বছর বইগুলো ইলেকট্রনিক ডিভাইসে নিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিতে পারতো। এই ১২ থেকে ১৩ কোটি টাকা ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা ঋণ দিতে পারতো, যা দিয়ে তারা ট্যাব কিনে এই বইগুলো ইনস্টল করে অনায়াসে পাঠচক্র চালিয়ে যেতে পারতো। আজ হোক কাল হোক তাদের এই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে লেখা পড়া চালিয়ে যেতে হবে।যেটা কাল করতে হবে সেটা আজ নয় কেন?

লেখক : আমিরুল ইসলাম কাগজী, সাংবাদিক

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]

ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0075099468231201