শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে কঠোর নীতিমালা করার তাগিদ অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাংশ ও সরকার দলীয় সাংসদরা চাইছেন সব প্রতিষ্ঠান এমপিওভু্ক্তি। আর ্এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বর্তমানে সারা দেশে ১০ হাজার ১৪৪টি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান নন-এমপিও। ২০১০ খ্রিস্টাব্দের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী যদি এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) দিতে হয় তাহলে বছরে বাড়তি ব্যয় হবে প্রায় ৩ হাজার ১৬৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অপরদিকে বর্তমানে এ খাতে সরকারের ব্যয় বরাদ্দ আছে বছরে ১৪ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে এ খাতে বর্তমানের তুলনায় ২০ শতাংশের বেশি ব্যয় বেড়ে যাবে। এখন সরকার এ ধরনের পদক্ষেপ নেবে কিনা- সে ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতি-নির্ধারকেরাই নিশ্চিন্ত নন।
এমন প্রেক্ষাপটে নতুন এমপিওভুক্তি নিয়ে কিছুটা সংশয় ও দুশ্চিন্তায়ও আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নাম প্রকাশ না করে একাধিক কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, ‘যতগুলো প্রতিষ্ঠান নন-এমপিও আছে তার সব যেমন এমপিওভুক্ত করা সম্ভব নয়। তেমনি বিদ্যমান এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কোনোটি বাদ দিলে বা অন্য ব্যবস্থা নিলে আন্দোলনের পাশাপাশি মামলার কবলে পড়তে হবে। সে ক্ষেত্রে আরও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তখন এমপিওবিহীন ও বাদপড়ারা মিলে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়বে।’
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পর্যালোচনাধীন এমপিও নীতিমালায় বিদ্যমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ, কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদির পক্ষে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন লাভবান হবে, তেমনি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক এমপিওভুক্তি ব্যয় বেড়ে যাবে। সারা দেশে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩টি নতুন পদ সৃষ্টি করতে হবে। তবে খারাপ দিক হচ্ছে, বিদ্যমান নীতিমালায় কারিগরি (বিএম) প্রতিষ্ঠানের সহকারী লাইব্রেরিয়ান এমপিওভুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত নেই। অথচ ২০১০ খ্রিস্টাব্দের আগে সহকারী লাইব্রেরিয়ানদের এমপিওভুক্ত করার বিধান ছিল। বিদ্যমান নীতিমালায় সেটা না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন ৩ শতাধিক সহকারী লাইব্রেরিয়ান।
জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো নীতিমালায় শুধু সহকারী লাইব্রেরিয়ানই নয়, কারিগরি প্রতিষ্ঠানই নেই। বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ২৭ হাজার। এ খাতে বরাদ্দ আছে ১৪ হাজার ১৮১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন-অনুন্নয়ন খাতে মোট বরাদ্দ আছে ২২ হাজার ৪০৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ৬৩ শতাংশের বেশি অর্থই বরাদ্দ হচ্ছে এ খাতে।