প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৪ মাসের বেতন দিতে চান আরও এক শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৪ মাসের বেতন দিতে চান আরও এক শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এমপিওভুক্তি হলে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ১৪ মাসের বেতনের পুরোটাই দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রদীপ কুমার দাস নামে এক শিক্ষক। এ তহবিল থেকে করোনায় আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়। সম্প্রতি দৈনিক শিক্ষার ইমেইলে তিনি একটি লেখা পাঠান। সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি খোলা চিঠি।

এর আগে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লিপা রানী সরকার একই দাবিতে ১৪ মাসের বেতন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। দেশের একমাত্র শিক্ষা বিষয়ক জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমে ‘এমপিও পেলে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে ১৪ মাসের বেতন দেবেন শিক্ষিকা’ শিরোনামে লেখাটি প্রকাশিত হয়।

ই-মেইলে প্রদীপ জানান, গত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত পদে আবেদন করেন প্রদীপ। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি সহকারী শিক্ষক হিসেবে জাতীয় মেধা তালিকায় নির্বাচিত হন তিনি। গত ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি বাগডোব উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (হিন্দুধর্ম) হিসেবে যোগ দেন প্রদীপ কুমার দাস। কিন্তু শূন্য ও এমপিওভুক্ত পদে যোগদান করেও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি প্রদীপ। এ নিয়ে রাজশাহীর উপপরিচালক বরাবর আবেদন করলে তিনি পরিদর্শন রিপোর্ট সংযুক্তি, জুনিয়র স্কুলে অতিরিক্ত ৩ জন এমপিওভুক্ত ও মহিলা কোটা পূরণ হয়নি জানিয়ে এমপিওভুক্তির আবেদন বাতিল করে দেন। এতে করে গত ১৪ মাস বিনা বেতনে চাকরি করছেন প্রদীপ। এ অবস্থায় এমপিওভুক্ত হতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান তিনি।

বিষয়টির সমাধান চেয়ে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানিয়ে প্রদীপ কুমার দাস প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন। দৈনিক শিক্ষার পাঠকদের জন্য প্রদীপ কুমার দাসের চিঠিটি তুলে ধরা হলো-

বরাবর,
জননেত্রী শেখ হাসিনা
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

বিষয় : মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর করোনা তহবিলে ১৪ (চৌদ্দ) মাসের বেতন প্রদান প্রসঙ্গে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,

যথাযথ সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। দেশের এই দুর্যোগ মুহূর্তে আমি ‘প্রদীপ কুমার দাস’ সহকারী শিক্ষক, (হিন্দু ধর্ম) বাগডোব উচ্চ বিদ্যালয় বড়াইগ্রাম, নাটোর। আপনার ত্রাণ তহবিলে আমার ১৪ (চৌদ্দ) মাসের বকেয়া বেতন ভাতা দিতে আগ্রহী। তবে তার আগে আমার চাকরির বর্তমান অবস্থা আপনার সদয় অবগতির জন্য নিম্নে বর্ণনা করছি।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ১৯/১২/২০১৮ গণ বিজ্ঞপ্তিতে আমি এমপিওভুক্ত পদে আবেদন করি । আমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেধাক্রম অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে বাগডোব উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (হিন্দু ধর্ম) হিসেবে নিয়োগের জন্য শূন্য পদে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ আমাকে সুপারিশ করে। উক্ত সুপারিশের আলোকে আমি ১১/০২/২০১৯ তারিখে সহকারী শিক্ষক (হিন্দু ধর্ম) শূন্য পদে যোগদান করি পূর্বের শিক্ষকের নাম কর্তন করে। ৮ আগস্ট ২০১৯ আবেদন করলে মাননীয় উপ পরিচালক মহোদয় স্যার (রাজশাহী) বাতিল করেন এবং যে কারণে বাতিল করেন তা হলো- ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম ৩৩ জন ছাত্রছাত্রী (৬ষ্ঠ-১০ম ছাত্রছাত্রী ৪৬ জন। প্রতিষ্ঠানের ৯ম, ১০ম স্বীকৃতি ও মঞ্জুরি উভয় আছে।) এবং ৩ জন শিক্ষক অতিরিক্ত এমপিওভুক্তি আছে মর্মে কারণ দেখান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সুপারিশ নিয়ে পুনরায় আবেদন করতে বলেন। 
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে সুপারিশের জন্য আবেদন করি। যার ডকেট নং -৫৯৮৩, তারিখ ২৩-০৯-২০১৯। কিন্তু তার কোনো উত্তর না পেয়ে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে নতুন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হলে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রতিবেদন জন্য আবেদন করলে জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয় সরেজমিনে পরিদর্শন করে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম ৫০ জন, ৯ম-১০ম সহ ৬৬ জন ছাত্রছাত্রী পান এবং নতুন প্রতিবেদন প্রদান করেন। নতুন প্রতিবেদন সংযুক্তি করে ৬ মার্চ ২০২০ আবেদন করলে মাননীয় উপ পরিচালক মহোদয় স্যার (রাজশাহী) আবার বাতিল করেন এবং যে কারণে বাতিল করেন তা হলো -পরিদর্শন রিপোর্ট সংযুক্তি করতে হবে (পরিদর্শন রিপোট প্রধান শিক্ষকের অগ্রাহয়ণ সংযুক্তি করা হয়েছিল)। জুনিয়র স্কুল ৩ জন শিক্ষক বেশি এমপিওভুক্তি রয়েছেন, মহিলা কোটা পূরণ নেই। আমি শূন্য পদ দেখে আবেদন করে ১ বছর ২ মাস বিনা বেতন বাড়ি থেকে ২৫ কি.মি. দূরে বাসা বাড়ি ভাড়া নিয়ে চাকরি করছি। আমার কি অপরাধ? আমি তো শূন্য ও এমপিওভুক্ত পদে আবেদন করেছিলাম।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার সমস্যার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আপনার নিকট জোর অনুরোধ করছি এবং আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সাধারণ ছুটির পরে আমাকে এমপিওভুক্ত করা হলে আমার বকেয়া ১৪ মাসের বেতন ভাতা সম্পূর্ণ জাতীয় এই দুর্দিনে আপনার ত্রাণ তহবিলে দান করবো।

আপনার দীর্ঘায়ু এবং সুস্থ জীবন কামনায়।

প্রদীপ কুমার দাস
সহকারী শিক্ষক
বাগডোব উচ্চ বিদ্যালয়
গ্রাম: আটঘড়ি, ডাক: ওয়ালিয়া
উপজেলা: বড়াইগ্রাম, জেলা: নাটোর।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037870407104492