প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: অপেক্ষার প্রহর বাড়ছে ১৩ লাখ প্রার্থীর - দৈনিকশিক্ষা

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: অপেক্ষার প্রহর বাড়ছে ১৩ লাখ প্রার্থীর

রুম্মান তূর্য |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলতি জানুয়ারি মাসেও হচ্ছে না। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজনের কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। তবে কয়ধাপে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। এরই মধ্যে দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলছে। বিধিনিষেধও জারি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারি-মার্চেও পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ১৩ লাখের বেশি প্রার্থী। অপরদিকে, ব্যাহত হচ্ছে লেখাপড়া। 

৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, পরীক্ষা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। তবে পরীক্ষা কয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।  

ফাইল ছবি

জানা গেছে, এ নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। চলতি মাসে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা থাকায় গত ডিসেম্বরেও পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পলিসি এন্ড অপারেশনস্ বিভাগ। পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে বিভাগের পরিচালক মণিষ চাকমার সাথে দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

তবে এ নিয়োগ কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় দৈনিক আমাদের বার্তার। তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষা আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। কিছু প্রস্তুতি বাকি আছে, যেগুলো তারিখ ঘোষণার পর নেয়ার কথা। কিন্তু পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে তারা এখনো মন্ত্রণালয়ের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পাননি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘ডিসেম্বরে পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি আমাদের ছিল। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার জন্য পরীক্ষা আয়োজন করা হয়নি। কেউ কেউ বলছেন জানুয়ারিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু  এখনও পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে কোনো আলোচনাই নেই। আপনারা বুঝে নেন কবে পরীক্ষা হচ্ছে।’

কর্মকর্তারা আরও বলছেন, পরীক্ষা ধাপে ধাপে আয়োজনের প্রস্তুতি আছে। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাই চূড়ান্ত। অবশ্য প্রার্থীদের উদ্দেশে কর্মকর্তারা বলছেন, এ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা হলে তা সবার আগে প্রার্থীরাই জানবেন। পরীক্ষার তারিখ প্রার্থীদের মোবাইলে এসএমএস করে পাঠিয়ে দেয়া হবে। প্রার্থীরা ওয়েবসাইট থেকে অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করে পরীক্ষায় অংশ নেবেন। আমরা বুয়েটের মাধ্যমে আবেদন নিয়েছি। পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ হলে আমরা বুয়েটকে জানাব। তারা অটোমেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক ক্লিকেই ১৩ লাখ প্রার্থীর কাছে এসএমএস পাঠাবেন। 

২০২০ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরের শেষ দিকে ৩২ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আবেদনগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় ২৪ নভেম্বর রাতে। আবেদন করেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ প্রার্থী। ফলে প্রতি আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৪০ জন। মোট ৩২ হাজার ৭৭টি শূন্য পদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫ হাজার ৬৩০ জন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদে ৬ হাজার ৯৪৭ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে।

নিয়োগপ্রত্যাশী প্রার্থীরা বলছেন, আমরা প্রায় দেড় বছর আগে আবেদন করেছি। করোনা সংক্রমণের কারণে পরীক্ষা হয়নি। ডিসেম্বরে পরীক্ষা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরে তারা বলল, এইচএসসি পরীক্ষার জন্য পরীক্ষা নেয়া হবে না। এখন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়টি নিয়েও দুশ্চিন্তায়। তবে আমরা দ্রুত পরীক্ষা দিয়ে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে চাই। আমরা পরীক্ষার অপেক্ষায় আছি।

একজন প্রার্থী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘আমারা বারবার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বলা হচ্ছে এই মাসে পরীক্ষা হবে, ওই মাসে পরীক্ষা হবে, কিন্তু পরীক্ষা হচ্ছে না। আর কত অপেক্ষা করবো। একবার প্রস্তুতি নেই পরে শুনি পরীক্ষা হবে না। একবার পরীক্ষা আয়োজনের সম্ভাবনা হয়, কিন্তু করোনা সংক্রমণ বাড়ে। আমরা কী করব বুঝতে পারছি না। আমরা চাই, দ্রুত পরীক্ষা নেয়া হোক।’

এদিকে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে আবেদন গ্রহণ শুরুর এতদিন পরও শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব না হওয়ায় প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা। তারা দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে তাদের স্কুলে পাঠানোর তাগিদ দিয়েছেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহীনুর আল আমিন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, করোনার কারণে দুই বছর স্কুল বন্ধ ছিল। এখন স্কুলগুলোতে সহকারী শিক্ষক সংকট আছে। প্রধান শিক্ষকের অনেক পদ খালি থাকায় সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চলতি দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা ক্লাসে আসতে পারছেন না। এতে ক্ষতি হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীদের। এখনই শ্রেণিকক্ষের শিক্ষক সংকট দূর না করা গেলে করোনায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। 

রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037100315093994